‘পরীর পাহাড়ে’ প্রবেশপথের জঞ্জাল সরাল জেলা প্রশাসন
১১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ১৭টি অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে পরীর পাহাড় হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রাম আদালত ও জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের প্রবেশপথ জঞ্জালমুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে দখলমুক্ত করেছে প্রায় সাড়ে ১৪ শতক সরকারি ভূমি।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর কোতোয়ালি থানার লালদীঘির পাড়ে এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধার করা ভূমির একাংশ নিয়ে পরীর পাহাড়ের প্রবেশপথ এবং ওঠার রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে। আরেক অংশে ওয়াশ ব্লক ও বসার স্থান নির্মাণ করা হবে।
পরীর পাহাড়ে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৩০টি সরকারি কার্যালয় আছে। প্রতিদিন হাজারখানেক আসামি আদালতে আনা-নেওয়া হয়। আদালতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবী এবং অন্যান্য সরকারি অফিসের সেবাপ্রার্থী মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজার মানুষের সমাগম হয় এ পাহাড়ে। কয়েক শ যানবাহন ওঠানামা করে।
সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘হাজার-হাজার মানুষ আর গাড়ি আসা-যাওয়া করে। কিন্তু পাহাড়ের প্রবেশপথ ও রাস্তা এতই সরু যে সারাদিনই যানজট লেগে থাকে। মানুষের নির্বিঘ্নে হাঁটারও কোনো সুযোগ নেই। কারাগার থেকে আসামিদের আনা-নেওয়ায়ও ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি তো আছেই। এ প্রতিবন্ধকতার একমাত্র কারণ রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন ধরনের অবৈধ স্থাপনা।’
‘এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানে নামে জেলা প্রশাসন। লালদিঘীর পাড়ে প্রবেশপথসংলগ্ন জায়গায় গড়ে তোলা ক্রাউন রেস্তোরাঁ, ব্রিজ রেস্তোরাঁ, জমজম রেস্তোরাঁ, হোটেল জামান এবং বিভিন্ন দোকানপাটসহ ১৭টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়,’— বলেন তৌহিদুল।
এই সহকারী কমিশনার আরও জানান, উদ্ধার করা ভূমির পরিমাণ প্রায় ১৪ দশমিক ৩৬ শতক ভূমি। বিএস জরিপে এ ভূমি সরকারি খাস হিসেবে নিবন্ধিত আছে। কিন্তু ১৭ ব্যক্তি সেখানে ব্যবসায়িক স্থাপনা তৈরি করে পুরো ভূমি অবৈধভাবে দখলে রেখেছিলেন।
২০১৭ সালে তাদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। তারা হাইকোর্টে পৃথক দুটি রিট করলে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। গত বছরের ২৩ নভেম্বর ও ২৭ নভেম্বর পৃথক রিট আবেদনের শুনানির মাধ্যমে হাইকোর্টে সেগুলো নিষ্পত্তি হয়। এর মধ্য দিয়ে জেলা প্রশাসনের সম্পদ উদ্ধারের পথও খুলে যায়।
অভিযানে বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ এফ এম শামীম এবং পুলিশ, পিডিবি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/টিআর