Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৌদ্ধবিহারের অগ্নি সংযোগকারী যুবক গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২৪

কক্সবাজার: জেলার রামু উপজেলায় বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যাহত করতে পরিকল্পিতভাবে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটনো হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই যুবকের নাম মো. আব্দুল ইয়াছির ওরফে শাহজাহান (২৩)। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতেও ‘তাকে দেখা গেছে’। গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এসপি মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতার আব্দুল ইয়াছির উপজেলার ফতেখাঁরকূল ইউনিয়নের পূর্ব মেরংলোয়া এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। তার বাবা বিএনপির ফতেখাঁরকূল ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি।

মাহফুজুল ইসলাম বলেন, গত ৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগের অন্তত ২০ থেকে ২৫ মিনিট আগে রামু ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের এক ব্যক্তি জানায় উপজেলা সদরের অন্তত ২০-৩০ কিলোমিটার দূরের ঈদগড় এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত সেখানে পৌঁছালে এ ধরনের কোনো সত্যতা না পেয়ে ফিরে যায়।

তিনি আরও বলেন, একই সময়ে ওই একই ব্যক্তি ফোন করে রামুর বিদ্যুৎ অফিসকে চেরাংঘাটা এলাকায় আগুন লাগার তথ্য দিয়ে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানান। মূলত অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি বাধাহীন করতে ঘটনার মূলহোতা আব্দুল ইয়াছির ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ অফিসকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে। পরে পরিকল্পনা মতো বৌদ্ধবিহারে দুষ্কৃতিকারিরা অগ্নিসংযোগ করে।

বিজ্ঞাপন

মাহফুজুল ইসলাম আরও বলেন, মূলত বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগ করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ঘটনার পর ফোনের কলের সূত্র ধরে পুলিশ জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতার অভিযান শুরু করে। এতে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনার মূলহোতা চট্টগ্রামে অবস্থান করার ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত হয়। পরে গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন অবস্থায় মো. আব্দুল ইয়াছিরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

আসামির প্রাথমিক স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সময় আব্দুল ইয়াছির একাই ছিলেন। আর অগ্নিসংযোগের জন্য তিনি কিছু কাপড়ের টুকরা এবং বড় একটি বোতলে তরল দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করেছেন। পরে ঘটনার সময় ব্যবহৃত ফোন থেকে সিম কার্ড আলাদা করে নিজের এলাকার কচু ক্ষেতে ফেলে দিয়ে চট্টগ্রামে আত্মগোপন করেছিলেন। ঘটনাটি তিনি একাই সংঘটিত করেছিলেন নাকি আরও কারা জড়িত ছিল— এ ব্যাপারে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার আসামি আব্দুল ইয়াছিরের বাবা আব্দুল করিম বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতা। পরিবারটির সকলে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আব্দুল ইয়াছিরকে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে সরব অংশগ্রহণ দেখা গেছে। এছাড়া বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার অংশগ্রহণের তথ্য রয়েছে পুলিশের কাছে। এমনকি তার ফেইসবুক আইডিতেও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৫ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলা সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় উসাইচেন রাখাইন বৌদ্ধবিহারে (বড় ক্যাং) অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারিরা অগ্নিসংযোগ করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মিরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় বিহারটির উপরের মূল প্রবেশদ্বারের সিঁড়ি পুড়ে যায়। এ ঘটনায় গত ৭ জানুয়ারি বৌদ্ধবিহারের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মংকিউ রাখাইন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

সারাবাংলা/ওএফএইচ/এনএস

কক্সবাজার বৌদ্ধবিহার রামু উপজেলা রামুর বৌদ্ধবিহার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর