Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধার তুলতে হালখাতা, তবু ওঠেনি অর্ধেক টাকা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৪

কুড়িগ্রাম: যুগ যুগ ধরে দোকানের বাকি টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন করা হলেও কুড়িগ্রামে ঘটেছে এক ব্যতিক্রম ঘটনা। এবার ধার দেওয়া টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন করেছেন আব্দুল আউয়াল সরকার। তিনি জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীরঝাড় এম এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তার হালখাতায় সারা দিয়েছেন টাকা ধার নেওয়া পরিচিতজনসহ বন্ধুরা।

গতকাল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) পরিচিতজন ও বন্ধুদের বিনা শর্তে ধার দেওয়া টাকা উত্তোলনের জন্য এই হালখাতার আয়োজন করা হয়। এরপরও অর্ধেক টাকা এখনো ওঠাতে পারেননি তিনি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবার দুপুরের পর উপজেলার কুড়িগ্রাম-সোনাহাট সড়কের অন্ধারীরঝাড় বাজারে ছামিয়ানা টাঙ্গিয়ে টেবিল চেয়ার নিয়ে বসে আছেন শিক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার। এই হালখাতায় ধার নেওয়া ব্যক্তিরা এসে টাকা পরিশোধ করেছেন। খাতায় তালিকা করে টাকা গুনে নিয়ে হাতে তুলে দিচ্ছেন বিরিয়ানির প্যাকেট।

শিক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার উপজেলার জয়মনির হাট ইউনিয়নের হাইকুমারীপাতি গ্রামের মৃত আব্দুস ছামাদের ছেলে। গত ৩ বছর যাবৎ ৩৯ জনকে তাদের অনুরোধে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ধার দেন তিনি। ধারের টাকা লজ্জায় চাইতে না পেরে দোকানের হালখাতা খেতে গিয়ে এ চিন্তা মাথায় আসে বলে জানান আব্দুল আউয়াল। দুই সপ্তাহ আগে ধারের টাকা আদায়ে হালখাতার জন্য চিঠি দেন তাদের। এর মধ্যে প্রায় ২০ জন হালখাতার মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।

হালখাতা অনুষ্ঠানে টাকা পরিশোধ করতে আসা জোবায়দুল ইসলাম বলেন, আব্দুল আউয়াল আমার শিক্ষক ও বড় ভাই। বিভিন্ন সময় ওনার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিয়েছি। কয়েকমাস আগে পাঁচ হাজার টাকা ধার নিয়েছি। এরমধ্যে গত ২৮ তারিখ হালকাতার চিঠি পেয়ে অবাক হই। পরে জানতে পারি ধারের টাকা তুলতে এই হালখাতার আয়োজন। এজন্য হালখাতা অনুষ্ঠানে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে কেন না, ধারের টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়াটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আসলে আপদে-বিপদে মানুষ একজন আরেকজনের কাছে টাকা ধার নেয়। এই প্রচলন সমাজে ধরে রাখা দরকার।

শিক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার বলেন, কেউ বিপদে পড়ে আমার কাছে টাকা ধার চাইলে না করতে পারি না। এভাবে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা পাওনা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কারও কাছে লজ্জায় টাকা চাইতে ভালো লাগছিল না। পরে দোকানের হালখাতা খেতে গিয়ে এই চিন্তা মাথায় আসে। হালখাতার মাধ্যমে প্রায় দেড় লাখ টাকা পেয়েছি।

সারাবাংলা/জেআই/এনএস

আন্ধারীরঝাড় এম এ এম উচ্চ বিদ্যালয় আব্দুল আউয়াল সরকার কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারী উপজেলা হালখাতা হালখাতার আয়োজন শিক্ষকের


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর