ভোটে ‘অনিয়ম’র অভিযোগ, তবু অভিনন্দন বিজয়ীকে
১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:২৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো : নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুললেও বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-১০ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদ। একইসঙ্গে পরাজিত সকল প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্যও তিনি শুভকামনা জানিয়েছেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন।
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী, খুলশী, হালিশহর) আসনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনি পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফুলকপি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র এম মনজুর আলম পান ৩৯ হাজার ৫৩৫। ফরিদ মাহমুদ পান ২ হাজার ৩৮ ভোট। আসনটিতে প্রার্থী ছিলেন মোট ৯ জন।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ মাহমুদ ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে প্রবেশের সময় অধিকাংশ এজেন্টের কাছ থেকে রেজাল্ট শিটে সই নেওয়া, কয়েকটি কেন্দ্রে এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া, বেলা ১২টার পর এজেন্ট বের করে দেওয়া এবং গণনার পর ভোটের পরিমাণ কম দেখানোর অভিযোগ করেন।
ফরিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমি ভোটারদের ডোর টু ডোর গিয়ে গণসংযোগ করেছি। আমার সঙ্গে সাড়ে তিন হাজার রাজনৈতিক সহকর্মী কাজ করেছেন। তাদের ভোট, তাদের পরিবারের ভোট, এজেন্টদের ভোট হিসেব করলে আমার ভোটের ফলাফল এমন হওয়ার কথা নয়। আমি লালখান বাজার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। উত্তর আগ্রাবাদে আমার দুটি ব্যবসায়িক কার্যালয় আছে। দুই ওয়ার্ডে আমার এত কম ভোট পাওয়ার কথা নয়। শুলকবহর, রামপুর, দক্ষিণ কাট্টলী, হালিশহর ওয়ার্ডের কয়েকটি কেন্দ্রে আমি জিতলেও ফলাফল ঘোষণার সময় আমার ভোট কমিয়ে পরাজিত দেখানো হয়েছে।’
‘ফলাফলে ২ হাজার ৩৮৫ ভোট বাতিল দেখানো হয়েছে। সেগুলো কোন প্রতীকের ভোট সেটা প্রকাশ করা হয়নি। ভোটের দিন সকালে দুই প্রতীকের এজেন্টদের কাছ থেকে মোবাইল জব্দ করা হলেও একজন প্রার্থীর এজেন্টদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি। অনেক ভোটকেন্দ্রের ভেতরে একটি প্রতীকের ব্যাজধারী ৫/৬ জন নেতাকর্মীর সার্বক্ষণিক অবস্থান ছিল। অভিযোগ করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভোটের আগেরদিন এবং ভোটের দিন একজন প্রার্থীর পক্ষে এলাকায়-এলাকায় এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যাতে ভোটাররা নিরাপদ পরিবেশে ভোট দিতে না পারেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা আমাকে ফোন করে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বলেছিলেন। আমি রাজি না হওয়ায় ভিলেজ পলিটিক্সের মতো আমার ভোট কম দেখিয়ে আমাকে হারানো হয়েছে। আমার সঙ্গে নোংরা খেলা হয়েছে। আমাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন কেউ কেউ। তাদের স্বপ্নভঙ্গ করে আমি এ আসনে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাব।’
ফরিদ মাহমুদ আরও বলেন, ‘সাধারণ ভোটারদের সমর্থন ও রায় পাব, এমন একটা আস্থা আমার ছিল। কিন্তু একজন প্রার্থীর নোংরা কৌশলের কাছে সাধারণ ভোটারদের রায় হেরে গেছে। তবুও বিজয়ী প্রার্থীকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং পরাজিত সকল প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য শুভকামনা।’
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ মাহমুদের নির্বাচনি এজেন্ট পলাশ খাস্তগীর, সমর্থনকারী জাকির হোসেন রিপন, নগর যুবলীগ সাবেক নেতা নেছার আহমেদ, শেখ নাছির আহমেদ, আশরাফুল গণি, শওকত হোসেন, ফিরোজ আলম সবুজ, আশরাফুল আলম টিটু, দেলোয়ার হোসেন দেলু, রাশেদ চৌধুরী, নাজমুল হাসান রুমি উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম