Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়ক দুর্ঘটনার ২৩ কারণ, রোধে ১৪ সুপারিশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:১৭

যাত্রী কল্যাণ সমিতির সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ২০২৩ সালে সারাদেশে ছয় হাজার ২৬১টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন সাত হাজার ৯০২ জন। এসব সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হয়েছেন আরও ১০ হাজার ৩৭২ জন। এসব দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান তুলে ধরে যাত্রী কল্যাণ সমিতি দুর্ঘটনার পেছনে ২৩টি কারণ খুঁজে পেয়েছে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ১৪টি সুপারিশও তুলে ধরেছে সংগঠনটি।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এক সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩ সালের সড়ক দুর্ঘটনার এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে। এ সময় দুর্ঘটনার কারণ ও দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

দুর্ঘটনার ২৩ কারণ

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে সড়ক দুর্ঘটনার ২৩টি কারণ উঠে এসেছে। এসব কারণের মধ্যে শুরুতেই রয়েছে বেপরোয়া গতি, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, রাস্তাঘাটের নির্মাণ ত্রুটি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন অবাধে চলাচলের সুযোগ, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, যানবাহন চালক ও মালিকের বেপরোয়া মনোভাব, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেডফোন ব্যবহার, মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো এবং বেলক্রসিং ও মহাসড়কে হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসার মতো বিষয়গুলো।

আরও পড়ুন- ২০২৩ সালে সড়কে নিহত ৭৯০২, গড়ে প্রতিদিন ২১ প্রাণহানি

রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক আইন অমান্য করা, ছোট যানবাহন ব্যাপক পরিমাণে বেড়ে যাওয়া, সড়কে চাঁদাবাজি, রাস্তার ওপর হাট-বাজার, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন চালানো, মালিকের অতিরিক্ত মুনাফার মানসিকতা, চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা, সড়কে আলোকসজ্জা না থাকা, রোড ডিভাইডার পর্যান্ত উঁচু না থাকা এবং সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে দ্বায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি না থাকাকেও সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যাত্রী কল্যাণ সমিতি চিহ্নিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া দেশব্যাপী নিরাপদ, আধুনিক, স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে টুকটুকি-ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশানির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেপরোয়াভাবে বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন মোজাম্মেল হক।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ

দেশে ব্যাপক প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়ানো সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১৪টি সুপারিশও তুলে ধরেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সুপারিশগুলো হলো—

  • করোনার চেয়েও ভয়াবহ মহামারি বিবেচনায় সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার প্রকল্পে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি অর্ন্তভুক্ত করা;
  • নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা;
  • সড়ক নিরাপত্তায় বাজেট বরাদ্ধ বাড়ানো, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে গঠিত সড়ক নিরাপত্তা ইউনিট শক্তিশালী করা;
  • সড়ক নিরাপত্তায় এরই মধ্যে প্রণীত যাবতীয় সুপারিশ বাস্তবায়ন করা;
  • দেশের সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা এবং জেব্রা ক্রসিং অঙ্কন ও আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা;
  • গণপরিবহনের চালকদের যুগোপযোগী পেশাদার প্রশিক্ষণ ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা;
  • সড়ক পরিবহন সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা, অনিয়ম-দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধ করা;
  • গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স প্রদানের পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক করা;
  • সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক সহায়তা তহবিলে আবেদনের সময়সীমা ছয় মাস নির্ধারণ করা;
  • স্মার্ট গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দেশব্যাপী পর্যাপ্ত মানসম্মত নতুন বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া;
  • ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য ট্রাফিক ট্রেনিং একাডেমি গড়ে তোলা;
  • উল্টো পথের আলো ও পথচারীর পারাপার রোধে মহাসড়কের রোড ডিভাইডার পর্যাপ্ত উঁচু করা;
  • গণপরিবহনে সেবা ও নিরাপত্তার মান পর্যবেক্ষণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, সচিব ও জেলা প্রশাসকদের প্রতিমাসে একদিন পরিচয় গোপন রেখে গণপরিবহন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা; এবং
  • পরিবহন খাতের প্রধানতম অংশীজন মালিক, শ্রমিক, যাত্রী ও সরকার হলেও দীর্ঘদিন ধরে এই খাতে ভাড়া নির্ধারণ, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণসহ যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মালিক-শ্রমিক-সরকার মিলেমিশে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়কে দুর্ঘটনা বেপরোয়া হারে বাড়ছে। তাই এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের মতামত গুরুত্ব দিতে হবে।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

টপ নিউজ দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ দুর্ঘটনার কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা যাত্রী কল্যাণ সমিতি সড়ক দুর্ঘটনা সড়কে নিহত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর