Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিশুসাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীন মারা গেছেন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৫২

ঢাকা: প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক খালেক বিন জয়েনউদদীন মারা গেছেন। রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারে নিজ ফ্ল্যাটে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যান তিনি। সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টায় মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাখা হবে। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে নিজের জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়া গ্রামে। সেখানেই সমাহিত করা হবে।

শিশুসাহিত্যিক হিসেবে খালেক বিন জয়েনউদদীন দেশে সুপরিচিত নাম। শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তার প্রয়াণে শোক জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, ‘বাংলাদেশের ছড়াসাহিত্য, শিশুতোষ জীবনী, মুক্তিযুদ্ধ-বঙ্গবন্ধু বিষয়ক রচনা এবং সামগ্রিকভাবে বাংলা শিশুসাহিত্যে তার অবদান অবিস্মরণীয়। বাংলা একাডেমির সঙ্গে ছিল তার নিবিড় সম্পর্ক। বাংলা একাডেমি পরিবার প্রয়াত খালেক বিন জয়েনউদদীনের আত্মার শান্তি কামনা করছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি জ্ঞাপন করছে গভীর সমবেদনা।’

১৯৫৪ সালের ২৪শে জানুয়ারি গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলাধীন চিত্রাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেন ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স নিয়ে ১৯৭৫ সালে এমএ পাশ করেন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে যশোরের বারোবাজারে ধৃত হয়ে পাকিস্তানি সেনা ছাউনিতে অকথ্য নির্যাতন ভোগ করেন এবং সাতমাস বন্দি থাকেন। পঁচাত্তরের পর তিনি ছড়া লিখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করেন।

খালেক বিন জয়েনউদদীন শিশুতোষ রচনা এবং বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রবন্ধ লিখে সুনাম অর্জন করেছেন। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘ধানসুপারি পানসুপারি’, ‘আতাগাছে তোতাপাখি’, ‘আপিল চাপিল ঘণ্টিমালা’, ‘জলকন্যে ঘাঘোর নদী’, ‘বকুলবনে জোছনাপরি’, ‘মউঝুরঝুর পুবাল হাওয়া’, ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই’, ‘একাত্তরের অশোক’, ‘নলিনীকান্ত ভট্টশালী’, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা’, ‘বাংলাদেশের গণহত্যা’, ‘হস্তাক্ষরে শামসুর রাহমানের ছড়া-কবিতা’ ও ‘পালকি চলে গগনতলে’।

তার লেখা আরও কয়েকটি গ্রন্থ হলো—‘ধান সুপারি পান সুপারি’, ‘আপিল চাপিল ঘন্টি মালা’, ‘চিরকালের ১০০ ছড়া’, ‘হৃদয় জুড়ে বঙ্গবন্ধু’, ‘নলিনীকান্ত ভট্টশালী’, ‘হুমায়ুননামা’, ‘মায়ামাখা শেখ রাসেল’, ‘বঙ্গবন্ধু ও শেখ রাসেল’ প্রভৃতি।

খালেক বিন জয়েনউদদীন দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের ফিচার বিভাগের ‘কচি-কাঁচার আসর’ পাতাটি সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন।

শিশুসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন তিনি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, সাউন্ডবাংলা সম্মাননা, তরিকত মিশন সম্মাননা, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ স্মৃতি পরিষদ সম্মাননা, কোটালীপাড়া গুণীজন সংবর্ধনাসহ নানা পুরস্কার অর্জন করেন।

সারাবাংলা/একে

খালেক বিন জয়েনউদদীন টপ নিউজ শিশুসাহিত্যিক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর