Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাভারের বামনী খাল রক্ষায় ৩ হাউজিংয়ের মাটি ভরাটে নিষেধাজ্ঞা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৯

সাভারের বামনী খাল, যা দখলমুক্ত করতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সাভারের চান্দুলিয়া, কন্ডা ও কান্দিবলিয়ারপুর মৌজার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ‘বামনী খাল’ রক্ষায় সেখানে চলমান জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং ও সুগন্ধা হাউজিংয়ের অননুমোদিত আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাটসহ সব কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই তিন আবাসন কোম্পনির মাধ্যমে এরই মধ্যে কী পরিমাণ জমি ভরাট করা হয়েছে, সে বিষয়ে রাজউক, পাউবো ও ঢাকার ডিসিকে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের শুনানি শেষে রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং ও সুগন্ধা হাউজিংয়ের অননুমোদিত আবাসন প্রকল্পের জন্য মাটি ভরাট থেকে বামনী খাল, খালসংলগ্ন জলাশয় ও কৃষিজমি রক্ষা ও সংরক্ষণে বিবাদীদের ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থি বিধায় কেন তা অবৈধ ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। পাশাপাশি রুলে আইন ও বিধি অনুযায়ী বামনী খাল, খালসংলগ্ন জলাশয় ও কৃষিজমি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ও খাল সংরক্ষণে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), নিজেরা করি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক), ব্লাস্ট ও নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খানের দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী শামিমা নাসরিন ও এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

রিট আবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার চান্দুলিয়া মৌজার আরএস দাগ নম্বর ১, ৭০; কন্ডা মৌজার আরএস দাগ নম্বর ৩৬৫, ৩৯০; এবং কান্দি বলিয়ারপুর মৌজার আরএস দাগ নম্বর ৫ খাল হিসেবে চিহ্নিত। স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে এসব দাগে অবস্থিত খালটি ‘বামনী খাল’ হিসেবে পরিচিত। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এ খাল একসময় কর্ণপাড়া খাল ও তুরাগ নদীর সংযোগ খাল হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করত। স্থানীয় কৃষি ও মৎস্য উৎপাদনেও এ খালের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে মনুষ্যসৃষ্ট নানামুখী কর্মকাণ্ডের কারণে এ খাল মারাত্মক অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এ খাল ভরাটকারীদের শীর্ষে রয়েছে জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং এবং সুগন্ধা হাউজিং লিমিটেড।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন সময় প্রকাশিত সংবাদ ও প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং ও সুগন্ধা হাউজিং কোম্পানি লিমিটেড বামনী খাল ও এর আশপাশে বিদ্যমান জলাধার, নালজমি ও কৃষিজমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। তারা কোনো ধরনের আইনি বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও পরিবেশগত ছাড়পত্র না নিয়ে বামনী খাল, জলাশয় ও কৃষি জমি ভরাট করে আসছিল।

তিন আবাসন কোম্পানির এসব অনুমোদিত কার্যক্রম বন্ধে ও বামনী খাল সংরক্ষণে বেলাসহ ছয়টি পরিবেশবাদী সংগঠন ও একজন ব্যক্তি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত বছর এই রিট দায়ের করেন।

রিটে ভূমি সচিব, কৃষি সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, পরিবেশ, বন সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালক, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক (ভিসি), ঢাকার পুলিশ সুপার, রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, সাভার উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ঢাকা জেলার পরিবেশ অধিদফতরের, উপপরিচালক, সাভারের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জম জম নূর সিটি, এস এ হাউজিং ও সুগন্ধা হাউজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিবাদী করা হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

খাল দখল বামনী খাল হাইকোর্টের রুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর