Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাকালুকি হাওরের মালাম বিল রক্ষায় হাইকোর্টের রুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৪

ঢাকা: মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের মালাম বিল রক্ষায় রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কর্তৃক ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর মনাদী মৎস্যজীবী সমিতির কাছে দেওয়া ইজারা বাতিল চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জনস্বার্থে বেলার দায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে (১৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শামীমা নাসরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ সরকার।

রুলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় হাকালুকি হাওরের অন্তর্ভুক্ত মালাম বিল ও বিলের জলাবনে গাছকাটা, স্থাপনা নির্মাণ, শ্রেণি পরিবর্তন রক্ষায় বিবাদীগণের ব্যর্থতা এবং বিলটিকে পূণরায় ইজারা দেওয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া হাকালুকি হাওরের সীমানা নির্ধারণ, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, আহরণমূলক ও ক্ষতিকর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ধারা ৫ এর বিধান অনুযায়ী হাওরটিকে রক্ষা ও সংরক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত বছরের ২৭ নভেম্বর মৌলভীবাজারের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন হাকালুকি হাওরের অন্তর্গত মালাম বিল রক্ষায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জনস্বার্থে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করে।

রিটে ভূমি সচিব, পরিবেশ সচিব, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদফতরের মহাপরিচালক, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার ডিসি, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এবং মনাদি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

উল্লেখ, দেশের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি মৌলভীবাজারের বড়লেখা, জুড়ি ও কুলাউড়া উপজেলা এবং সিলেট জেলার ফেঞ্জুগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। এটি দেশের অন্যতম প্রধান মিঠাপানির বন। ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল এই হাওরের ১৮ হাজার ৩৮৩ (আঠারো হাজার তিনশত তিরাশি) হেক্টর এলাকাকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত এই হাওরে ছোট-বড় অনেক বিল রয়েছে যার মধ্যে মালাম বিল অন্যতম। মালাম বিলটি বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের দ্বিতীয়ারদেহী-৮৩ মৌজার এস এ ৫৪ ও ১০৮ দাগে অবস্থিত যার আয়তন ৪২৮.৯২ একর। বিলটি বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ৫ বছর মেয়াদে (১৪২৭-১৪৩২ বঙ্গাব্দ) ডিসি মনাদী মৎসজীবী সমবায় সমিতি বরাবরে মৎস্য চাষের উদ্দেশ্যে ইজারা দেয়।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিদর্শন ও বড়লেখা ভূমি অফিসের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ইজারা চুক্তি লঙ্ঘন করে এ বিলের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ও পরিবেশ অধিদফতরের লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির জলজ বৃক্ষ (হিজল, করচসহ অন্যান্য জলজ প্রজাতি) কেটে মনাদী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ২ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ ও ১০-১২ বিঘা জমি চাষ উপযোগী করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতর বড়লেখা থানায় সাত জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করলেও প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে জলজ প্রজাতির বৃক্ষনিধন ও বাঁধ নির্মাণের স্পষ্ট অভিযোগ থাকলেও মামলায় ইজারা গ্রহণকারীকে বিবাদী করা হয়নি এবং ইজারা চুক্তিও বাতিল করা হয়নি।

পরে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত হাকালুকি হাওর ও মালাম বিল রক্ষায় জনস্বার্থে বেলা রিটটি দায়ের করে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও

মালাম বিল হাইকোর্টের রুল হাকালুকি হাওর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর