Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাজা ভোগ করা বিদেশি কারাবন্দিদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২২

ঢাকা: কোনো অপরাধে সাজা খাটা শেষ করার পরও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রয়েছেন- এমন দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশি নাগরিকদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ সময়ের মধ্যে আদালতে কারা মহাপরিদর্শককে (আইজি প্রিজন) এই তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে।

পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) মুক্তি দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার বিভূতি তরফদার। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার নিশহাত মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।

পরে রিটকারী আইনজীবী বিভূতি তরফদার বলেন, ‘অন্তর্বর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের আদেশর পরও ২২ মাস ধরে একজন বিদেশিকে দেশে ফেরত না পাঠিয়ে কারাবন্দি রাখা সংবিধানের ৩২ এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত সর্বজনীন ঘোষণার লঙ্ঘন।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনুপ্রবেশের দায়ে দণ্ডিত ভারতের গোবিন্দ উড়িয়া সাজা খেটে ফেলার পরও তাকে কারাবন্দি রাখা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, আদালতের নির্দেশমতো গোবিন্দ উড়িয়াসহ সাজাপ্রাপ্ত বিদেশি কারাবন্দিদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করার নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং বিদেশি কারাবন্দিদের সাজার মেয়াদ শেষে তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলাদা একটি বিভাগ করার নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন), মৌলভীবাজার জেল কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসককে (ডিসি) এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদন থেকে জানা যায়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) গ্রেফতার করে বিজিবি। ওইদিনই তাকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে মামলা করেন বিজিবির হাবিলদার মো. রশিদ প্রধান। তদন্তের পর ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান। ওইদিনই গোবিন্দ উড়িয়ার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮ এর ২৪২ ধারা ও দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেন মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম মিজবাহ উর রহমান।

অভিযোগ গঠনের সময় অনুপ্রবেশের দোষ স্বীকার করেন অভিযুক্ত গোবিন্দ উড়িয়া। ফলে অভিযোগ গঠনের দিনই মামলার রায় দেন বিচারক। দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় আদালত গোবিন্দ উড়িয়াকে ২ মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি এর আগে মামলা সংশ্লিষ্টতায় হাজতবাস করে থাকলে উক্ত হাজতবাসকালীন দণ্ডবিধির ৩৫(ক) ধারা অনুসারে বাদ যাবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। সে অনুসারে রায়ের দিন অর্থাৎ ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত গোবিন্দ উড়িয়া ৪দিন বেশি হাজতবাস করে ফেলেছেন।

রায়ে বলা হয়, যেহেতু আসামি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং এরই মধ্যে সাজার মেয়াদ ভোগ করে ফেলেছেন, সেহেতু ভারতীয় নাগরিক হিসেবে আসামিকে বিধি মোতাবেক প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হলো।

এই রায়ের পর দুই বছর কেটে গেলেও কারাগার থেকে ছাড়া না পাওয়ায় গোবিন্দ উড়িয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও

বিদেশি কারাবন্দি সাজা ভোগ হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর