মুন্সীগঞ্জে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৬
মুন্সীগঞ্জ: জেলায় বারেক শেখ (৪৪) হত্যা মামলায় তিন আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। একইসঙ্গে দণ্ডবিধি ৩৯৪ ধারার অপরাধে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম করাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের দণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আবদুল হান্নান এ রায় দেন। এ সময় পুলিশের পাহারায় আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়।
আসামিরা হলেন— মো. মিলন শিকদার (৩৪), মো. ফয়সাল জুয়েল শেখ (২৮), মো. নাজির হোসেন। এর মধ্যে মিলন শিকদার লৌহজং উপজেলার উত্তর মসদগাঁও গ্রামের মৃত নাজির আহমেদ শিকদারের ছেলে, জুয়েল শেখ একই এলাকার মিলন খানের ছেলে এবং মো. নাজির হোসেন মোড়ল একই গ্রামের মৃত বাদশা মোড়লের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত আব্দুল বারেক শেখ টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সহকারী উদ্যোক্তা ছিলেন। ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি সকালে বারেক শেখ বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে বের হন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে টঙ্গীবাড়ী থানা পুলিশ নিহতের বাবা মোস্তফা শেখ মোড়লকে (৬০) জানায় বারেক শেখ অহত হয়ে বলই টু তৌলকাইগামী ব্রিজের মাঝামাঝি রাস্তার দক্ষিণ পার্শ্বে থাকা বিদ্যুতের খুঁটির পাশে পড়ে আছেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন আসামিরা লৌহজং উপজেলা হতে পাশের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বালিগাঁও বাজারে মোটরসাইকেলে এসে ব্যাংক এশিয়ার সামনে অবস্থান নেয়। তাদের একজন ব্যাংকে ঢুকে বেশি টাকা উত্তোলনকারীকে চিহ্নিত করতে থাকে। অপর দুইজন ব্যাংকের সামনে অবস্থান করতে থাকেন। ওই সময় নিহত বারেক শেখ কাঁধে একটি স্কুল ব্যাগ ঝুলিয়ে দ্রুত ব্যাংক থেকে নেমে অটোরিকশা করে টঙ্গীবাড়ী বাজারের দিকে রওনা করেন। তখন আসামিরা মোটরসাইকেলে করে অটোরিকশাকে অনুসরণ করতে থাকে। রিকশাটি বলই থেকে তোলকাইগামী ব্রিজের মাঝামাঝি নির্জন স্থানে পৌঁছলে আসামিরা নিহত বারেক শেখকে রিকশা থেকে নামতে বলে। এরপর আসামিরা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। আসামিদের আঘাতের ফলে ঘটনাস্থলেই বারেক শেখের মৃত্যু হয়।
পরে ওই ঘটনায় নিহতের বাবা মোস্তফা বাদী হয়ে টঙ্গীবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করে। এছাড়া আসামিরা গ্রেফতারের পর আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা কে এম রিয়াজুল বলেন, সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করা হয়। এরপর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিদের বিভিন্ন কৌশলে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি এবং খেলনা পিস্তলসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারের পর আসামিরা তিনজনই আদালতে বিচারকের কাছে ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আসামিরা গ্রেফতার হওয়ার পর হতে পুলিশ হেফাজতে আছে।
সারাবাংলা/এসইএইচটি/এনএস