‘গণবিরোধী রাজনীতি দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে’
২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৪
ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেছেন, ‘যে প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির হাতে আমাদের কমরেডরা ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি শহিদ হয়েছিল এই সরকারের আমলে তারা আরও শক্তিশালী হয়েছে। এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের পর গত ৩৩ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু গণতন্ত্র আসেনি। এদের অপরাজনীতি, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী রাজনীতি দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়।’
শনিবার (২০ জানুয়ারি) পুরানা পল্টনে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত অস্থায়ী শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
শাহ আলম বলেন, ‘দুর্নীতি, লুটপাট, সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য আওয়ামী ও বিএনপি ধারার বাইরে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীলদের বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছিল। আজ তা নির্বাসনে চলে গেছে। গত ৭ জানুয়ারি যে একতরফা ও প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে জনবিচ্ছিন্ন সরকার আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে, সংসদ নিরঙ্কুশভাবে দখল হয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের হাতে।’
পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘দেশে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসনের নতুন পর্ব শুরু হয়েছে। এর অবসান ছাড়া দেশে গণতন্ত্র, জনগণের ভাত-কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণআন্দোলন করতে হবে।’
অস্থায়ী শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, গণফোরাম, বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পার্টি, ঐক্য ন্যাপ, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন কেন্দ্রীয় পাঠচক্র ফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), সিপিবি ঢাকা মহানগর (উত্তর), সিপিবি ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ), সিপিবি ঢাকা জেলা, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, কৃষক সমিতি, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, ক্ষেতমজুর সমিতি, ইএইডি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, কৃষিবিদ ইউনিয়ন, বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন, মণি-সিংহ ট্রাস্ট, ছাত্র ফ্রন্ট, কেন্দ্রীয় কমিটির সংশ্লিষ্ট শাখা, কেন্দ্রীয় দফতর শাখা, একতা, নারী সেল, লেখনী কম্পিউটার্স এবং ঢাকা নগরের বিভিন্ন থানা ও শাখাসহ শতাধিক সংগঠন।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের এই দিনে রাজধানীর পল্টন ময়দানে সিপিবি’র লাখো মানুষের মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালায় প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্র। এই হামলায় খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরা থানার লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই এবং খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস রায় আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ওই বছরেই ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান। বোমা হামলায় শতাধিক কমরেড আহত হন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও