Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্যাস সংকট ইস্যুতে যা বললেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:১৫

ঢাকা: বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, চট্টগ্রাম ও ঢাকাতে গ্যাসের যে সংকট তৈরি হয়েছে তা দুয়েকদিনের মধ্যেই কেটে যাবে। তিনি আরও বলেন, দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল-এফএসআরইউ’র মেরামতের জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। সেগুলো দেশে ফিরে আসার পর একটিতে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় গ্যাস সরবরাহ ব্যহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

গ্যাসের প্রেসার কম জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহে সবার জন্য মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গেল দু’দিন যাবত গ্যাসে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। শুক্র ও শনিবার মারাত্মক সমস্যা দেখা দিয়েছিল বিশেষ করে চট্টগ্রামে এবং পরবর্তী সময়ে ঢাকায়। আমাদের দুটি ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটের (এফএসআরইউ) একটির ডকিং করার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। দেশে কাজ শুরুর সময় সেটিতে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। দ্বিতীয় এফএসআরইউতেও কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আপাতত আজ দুটিই চালু আছে।’

‘এর মধ্যে একটি আবার চলে যাবে ডকিংয়ে। তবে যেটি বাইরে থেকে এসেছে, সেটি পূর্ণোদ্যামে কাজ শুরু করেছে। আমরা আশাবাদী, ঢাকা ও চট্টগ্রামের গ্যাস দুয়েকদিনের মধ্যে আরও ভালো অবস্থায় চলে যাবে। এটা হলো সুখবর’- যোগ করেন তিনি।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘এটা আকস্মিক বিষয়, সাময়িক। শীতে গ্যাসে এমনিতেই একটু সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে বাসাবাড়িতে রান্নাবান্নার জন্য। এ সমস্যাটির সমাধানে আমরা ইতোমধ্যে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ইন্ট্রোডিউস করেছি। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ এলপিজি কাভার করে। অল্পসংখ্যক গ্রাহক বাসাবাড়িতে চুলায় গ্যাস ব্যবহার করেন। এরমধ্যে ঢাকা এবং আশপাশে, ময়মনসিংহের কিছু অংশ ও চট্টগ্রামের কিছু অংশ কাভার করে।’

তিনি বলেন, ‘শিল্পখাত বাদ দিলে সবমিলিয়ে আমাদের গ্রাহক সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ লাখ হতে পারে। এই গ্রাহকদের আমরা আস্তে আস্তে মিটারের মধ্যে নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে সাড়ে চার লাখ গ্যাস মিটার বসানো হয়েছে। আগামী তিন বছরের মাথায় সবার জন্য গ্যাস মিটার লাগানোই আমাদের লক্ষ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান ফাইন্যান্সিং ব্যাংক অর্থায়ন করছে। আমরা অচিরেই টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করব। ইতোমধ্যে জালালাবাদে পঞ্চাশ হাজার, কর্ণফুলীতে আড়াই লাখ ও ঢাকায় চার লাখ মিটার বসানোর কাজ শুরু করে দিয়েছি। এই মিটারগুলো বসানো হলে যারা যেভাবে গ্যাস পাবেন, সেভাবেই বিল হবে। এখন যেটা হচ্ছে, মাস শেষে অনেকে টাকা দিচ্ছেন, কিন্তু গ্যাস পাচ্ছেন না। গ্যাসের প্রেসার কম।’

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অন্তত সাড়ে সাত লাখ অবৈধ গ্যাস লাইন উচ্ছেদ করেছি। কিন্তু তবুও অবৈধ লাইন রয়েছে। যে কারণে গ্যাস প্রাপ্তিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমরা এই লাইন উচ্ছেদের কাজ চলমান রেখেছি।’

গ্রাহকদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন। আমরা জানি, সাময়িক সমস্যা আছে। এলপিজি ব্যবহার বাড়াতে চাচ্ছি আমরা। এলপিজি এখন গাড়িতেও ব্যবহার হচ্ছে, বাসাবাড়িতেও হচ্ছে। কোনো কোনো সময় কেউ কেউ বলেন, এটার দাম বেশি। আমরা এটিকে ডায়নামিক প্রাইসিংয়ের আন্ডারে নিয়ে গিয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ভর করে বিশ্ববাজারে দামের ওপর। বিশ্ববাজারে দাম কম হলে এখানেও কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু আপনাদের অনুরোধ করব, একটু ধৈর্য ধরেন, অচিরেই বাসা-বাড়িতে মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা যায়।’

এটা করতে কতদিন লাগবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুই থেকে তিন বছরের মাথায় সব বাড়িতে মিটার বসানো হবে। পাঁচ থেকে সাত বছর আগে আমরা জাইকার তহবিল পেয়েছিলাম, এটা চলমান প্রক্রিয়া। এখন আরও ২০ লাখ মিটার লাগাতে হবে। এই প্রকল্পের জন্য আমরা মোটামুটি অর্থের সম্ভাবনা পেয়েছি।’

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

টপ নিউজ নসরুল হামিন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর