Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নতুন রূপে আসছে প্রাথমিকের স্কুল ফিডিং, বাস্তবায়ন ১৫০ উপজেলায়

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৭

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হবে খাবার। প্রতীকী ছবি

ঢাকা: আড়াই বছর আগে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মিড ডে মিল হিসেবে খিচুড়ি দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ওই প্রকল্পে শিশুদের রান্না খাবারের ব্যবস্থাপনা দেখতে কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানোর একটি অঙ্গ থাকায় সেটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাতিল করা হয়।

এবারে সেই প্রকল্পটিই সংশোধন করে নতুনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে। ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা থেকে প্রকল্পটি চার হাজার ৬৯৫ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। ১৫০টি উপজেলায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এবারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে গভর্নমেন্ট স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম (প্রথম পর্ব)। সরকারি তহবিল থেকে চার হাজার ৬৯৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা ও বৈদেশিক অনুদান থেকে ৬৪ কোটি ২০ লাখ টাকাসহ চার হাজার ৭৫৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে প্রকল্পটির। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে।

আরও পড়ুন- সেই ‘খিচুড়ি প্রকল্প’ বাতিল

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবারের পিইসি সভায় সভাপতিত্ব করবেন কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী। ওই সভায় প্রকল্পটির বিভিন্ন অঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল। ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ প্রকল্পটি। একনেক সভায় উপস্থাপন করা হলে সেটি অনুমোদন করা হয়নি। বরং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবসম্মত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনকে জানিয়েছে, এর পরিপ্রেক্ষিতেই বর্তমান প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কমিশন বলছে, অনুষ্ঠেয় পিইসি সভায় প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বিতরণ ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট তথ্য সম্পর্কে সভায় আলোচনা করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় এরই মধ্যে দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি (তৃতীয় সংশোধিত) বিনিয়োগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এর মধ্যে সমাপ্ত প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত এবং এই প্রকল্পের আওতায় খাদ্য সংগ্রহ ও বিতরণ ব্যবস্থাপনার তুলনামূলক বিবরণী সভায় জানতে চাওয়া হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় ১৫০টি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাবার বিতরণের প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। পিইসি সভায় সেসব স্কুল ও শিক্ষার্থীর সুনির্দিষ্ট সংখ্যাসহ শিক্ষার্থীরা কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাবে, তা সভায় আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ডব্লিউএফপি অনুদান হিসেবে ৬৪ কোটি ২০ লাখ টাকা স্কুল ফিডিং কার্যক্রম খাতে ব্যয় করা হবে। মন্ত্রণালয় অগ্রাধিকার তালিকায় প্রকল্পটি কী অবস্থানে রয়েছে, সেটিও জানতে চাওয়া হবে।

পিইসি সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, গত বছরের ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠিত প্রকল্পের যাচাই কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গুণগতমান বজায় রেখে রান্না করা খাবার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ অসুবিধাজনক বলে প্রকল্প থেকে এই অংশটি বাদ দেওয়ার কথা ছিল। তারপরও রান্না করা খাবার বিতরণের ব্যবস্থা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যাখা জানতে চাওয়া হবে।

এ ছাড়া প্রস্তাবিত প্রকল্পে একটি জিপ, তিনটি মাইক্রোবাস ও ১৫০টি মোটরসাইকেল কেনার জন্য পাঁচ কোটি ১১ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। এর আগে সমাপ্ত দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি প্রকল্পটিতে দুটি যানবাহনসহ অন্যান্য অফিস সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অফিস সরঞ্জামও সর্বশেষ কী অবস্থায় আছে, তা জানা এবং সেগুলো প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হবে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পে খাদ্যসামগ্রী বা স্কুল ফিডিং খাতে মোট চার হাজার ১৮১ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে, যা মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৮৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এ ব্যয় প্রাক্কলনের ব্যয়ভিত্তিক কার্যক্রম ও যৌক্তিকতা নিয়ে সভায় আলোচনা করা হবে। প্রকল্পে জরিপ মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন খাতে দুই কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জরিপ মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশনের সার্বিক রূপরেখা সভায় আলোচনা করা হবে।

প্রস্তাবিত প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) হ্যান্ডওয়াশ দুই কোটি টাকা, সেমিনার বা ওয়ার্কশপে দুই কোটি টাকা, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা দুই কোটি টাকা এবং এয়ার কন্ডিশনার অঙ্গে ২৮২ কোটি ৬০ লাখ টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে। এসব ব্যয়ের ভিত্তি ও যৌক্তিকতাও জানতে চাওয়া হবে পিইসি সভায়।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

একনেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড ডে মিল স্কুল ফিডিং

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর