Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংরক্ষিত আসন পেতে রাজশাহীর নেত্রীদের দৌড়-ঝাঁপ শুরু

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:১৪

রাজশাহী: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ হয়ে গেছে। গঠন করা হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভা। সেই মন্ত্রিসভাও শপথ নিয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে সংরক্ষিত নারী আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ। সরকার গঠনের পর পরই সরব হয়ে উঠছেন নারী প্রার্থীরা। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে সংরক্ষিত আসনের ভোট।

দ্বাদশ সংসদের সংরক্ষিত ৫০ আসনের নির্বাচন এবং ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। কমিশনের অনুমোদন পেলে চলতি সপ্তাহে সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের ভোটার হন।

সংরক্ষিত আসনে রাজশাহী থেকে কে হচ্ছেন নারী সংসদ সদস্য তা নিয়ে এখনই কুঁড়ি থেকে শাখা-প্রশাখায় মেলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পরপরই সম্ভাব্য নারী সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নজর এখন সেদিকেই। বিষয়টি নিয়ে দেন-দরবারের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় অস্থান করছেন কেউ কেউ।

রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নের জন্য এবার বেশ কয়েকজন নারী নেত্রী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নাসরিন আক্তার মিতা, সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রোকসানা মেহবুবা চপলা, সাবেক মহানগর মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইফফাত আরা কামাল।

বিজ্ঞাপন

সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এবার নতুন মুখ হচ্ছেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী। তিনি রাজনীতি ও সমাজসেবায় ইতোমধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তিনি জনপ্রিয় রাজনৈতিক নারী নেত্রী হয়ে উঠেছেন এরই মধ্যে। নারীদের সংগঠিত করার পেছনে তার অবদান রয়েছে বলে দৃঢ়ভাবে মনে করেন নেতাকর্মীরা।

গত সিটি ও সংসদ নির্বাচনে নারীদের নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শাহীন আক্তার রেনী। এছাড়া দলীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি সবসময় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রাখার কারণে ইতোমধ্যে বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। এজন্য তাকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করতে ইতোমধ্যেই জোরালো দাবি উঠেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হন প্রয়াত জিনাতুন নেসা তালুকদার। ২০১৪ সালে তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় বাদ পড়েন তিনি। রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সেবার নতুন মুখ হিসেবে সংসদ সদস্য হন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বেগম আখতার জাহান। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন যুব মহিলা লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আদিবা আনজুম মিতা। অনেকটা চমক দিয়ে তিনি সংসদ সদস্য হন।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী রোকসানা মেহবুবা চপলা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রলীগ থেকে শুরু হয়ে এখন আমি জেলা কমিটির সদস্য পদে আছি। আশা করছি, দল আমাকে নিরাশ করবে না।’

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি ১৯৯৫ সাল থেকে মহিলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। বর্তমান যারা আছে তাদের চেয়ে আমি অনেক সিনিয়র। সংরক্ষিত আসনের জন্য আমি দাবি করতেই পারি। দলীয় নেত্রী যদি চায় তাহলে আমি অবশ্যই এই আসনের এমপি হব।’

বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আদিবা আনজুম মিতা সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই আসনের গত টার্মের সংসদ সদস্য ছিলাম। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছি। দরিদ্র মানুষদের সহযোগিতা করেছি। আশা করছি, আমি এবারও এই পদে আসব। নেত্রীর প্রতি আমার আস্থা ও ভরসা আছে।’

বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফফাত আরা কামাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। রাজশাহী মহানগরীতে নারীদের সংগঠিত করার জন্য আমার অবদান আছে। মহিলা লীগে ১৯৯০ সাল থেকে যুক্ত। ওয়ার্ড থেকে থানা হয়ে মহানগর, এখন কেন্দ্রে আছি। যদি দল ও নেত্রী আমাকে চায় তাহলে অবশ্যই সংরিক্ষত আসনের সংসদ সদস্য হব। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যা মঙ্গলজনক হবে তিনি আমাদের জন্য তাই করবেন।’

জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এখানেই দুই টার্মের দায়িত্ব পালন করেছি। এর আগে দলের কাছে কিছু চাইনি। এবার সংরক্ষিত আসন চাইব। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই সংসদ সদস্য বানাবেন। তবে আমিও আশাবাদী।’

রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা সারাবাংলাকে বলেন, ‘মনোনয়ন অনেকেই চাইবেন। তবে এর মধ্যে যিনি সৎ, যোগ্য ও সাংগঠনিক, তাকেই আমরা চাইব। দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা যা ভালো বুঝবেন তাই করবেন। আমরাও যোগ্য সংসদ চাই এ আসনে।’

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘কে প্রার্থী হচ্ছে না হচ্ছে আমি তা জানি না। নেত্রী যা ভালো বুঝবেন তাই করবেন। রাজশাহীতে কতগুলো প্রার্থী আছেন সেটাও আমার অজানা। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই।’

সারাবাংলা/পিটিএম

জাতীয় সংসদ রাজশাহী সংরক্ষিত আসন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর