Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তীব্র শীতে মরে যাচ্ছে বীজতলা, দুশ্চিন্তায় দিনাজপুরের কৃষক

সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৬ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২০

দিনাজপুর: মাঘের শুরু থেকেই শীতের দাপটে কাঁপছে উত্তরের জেলা দিনাজপুর। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে এ জনপদ। তবে দুপুরে পরে সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না কনকনে ঠান্ডা। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে মরে যাচ্ছে বোরো বীজতলা। এতে করে সঠিক সময়ে বোরো রোপণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জেলার কৃষকরা। তবে কৃষি বিভাগের দাবি, চাহিদার ২০ শতাংশ বেশি বীজতলা তৈরি করা হয়েছে এ অঞ্চলে।

এদিকে তীব্র শীতের কারণে গরম কাপড়ের অভাবে ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না নিম্ন আয়ের মানুষজন ও দিনমজুররা। পেটের তাগিদে বাহির হলেও আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত নানান রোগে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস।

হিলির মাসুদ রানা বলেন, মাঘের শুরু থেকে শীতের মাত্রা অনেকটা বেড়েছে। গতকালকের চেয়ে আজ আরও বেশি শীত পড়েছে। যত দিন যাচ্ছে তত শীতের মাত্রা বাড়ছে। বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। এতো পরিমাণ কুয়াশা ঝরছে যে, কুয়াশার কারণে অনেক বেলা পর্যন্ত ঠিকমতো কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। দিনের বেলাতেও মনে হচ্ছে সন্ধ্যা লেগে গেছে। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়া বইছে। এতে করে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

সাজ্জাদ হোসেন নামের আরও একজন বলেন, শীতের কারণে ঘর থেকে বাহির হওয়া যাচ্ছে না। এতে করে ঠিকমতো কাজেও যেতে পারছি না। আবার পেটের তাগিদে বাহির হলেও যারা কাজে নেবে তারা না আসায় আগের মতো কাজ মিলছে না। কাজ করতে না পারায় সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের মতো মানুষদের। তার ওপর গরম কাপড়ের অভাব তো রয়েছে। সব মিলিয়ে শীতের কারণে আমাদের খুব কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

হিলির চারমাথা মোড়ের চা-দোকানি রাসেদুল বলেন, ‘হিলিতে যেভাবে কুয়াশা পড়ছে, এর সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। যার কারণে প্রচণ্ড শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের কারণে বাড়ি থেকে আসতে দেরি হওয়ায় দোকান খুলতেও দেরি হচ্ছে। তবে তীব্র শীতের মাঝে এতো কষ্ট করে দোকান খুলেও আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ শীতের কারণে বাজারে মানুষজন তেমন নেই। যার কারণে বেচাকেনাও তেমন একটা নেই।

হাকিমপুর উপজেলা ছাতনী গ্রামের কৃষক রঞ্জিত সাহ বলেন, ‘এবার শুরু থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনের ঠান্ডার কারণে বীজতলা মরে যাচ্ছে। আমরা বীজতলা নষ্টের শঙ্কায় জমি প্রস্তুত করতে পারছি না। গেল বছর ঠিক এ সময় বোরো রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু এবার দেরিতে লাগাতে হবে। এবার বীজতলা নষ্টের কারণে খরচও বাড়বে বোরো আবাদে।’

দিনাজপুর জেলা কৃষি অফিসের উপপরিচালক নূরুজ্জামান বলেন, ‘এবার দিনাজপুর জেলায় ৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। এছাড়া জেলায় বোরো রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে, ইতোমধ্যে ৩১৬ হেক্টর জমিতে বোরো রোপণ সম্পূর্ণ হয়েছে। বীজতলা নষ্ট হলেও বোরো রোপণ ব্যহৃত হবে না।’

আবহাওয়া অধিদফতর দিনাজপুরের ইনচার্জ আসাদুজ্জামান বলেন, কয়েকদিন থেকে দিনাজপুরের তাপমাত্রা কমতির দিকে। এই সপ্তাহে তাপমাত্রা আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সারাবাংলা/এসআর/এনএস

দিনাজপুর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর