সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে বাজার মূলধন কমেছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা
২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৭
ঢাকা: পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর গত সপ্তাহে (২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি) লেনদেনে হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই সূচকের বড় পতন হয়েছে। এই সময়ে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদের শুরুতে বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ ৮৭ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে তা কমে সাত লাখ ৫৪ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকায় নেমে আসে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ৩২ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। একই সময়ে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে সপ্তাহশেষে বেড়েছে আর্থিক ও শেয়ার লেনদেন।
জানা গেছে, পুঁজিবাজারে লাগাতার দরপতন হলে গত চার বছরে কয়েক দফায় শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রথমবার ২০২০ সালে মার্চে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করলেও ২০২১ সালের জুলাইয়ে তা তুলে নেওয়া হয়। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে আবারও ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি। এ নিয়ে সমালোচনা হলে গত ১৮ জানুয়ারি প্রথম ধাসে ৩৫টি প্রতিষ্ঠান বাদে সবগুলোর ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। এরপর ২১ জানুয়ারি আরও ২৩ প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। এতে করে গত সপ্তাহেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে প্রায় ৩ শতাংশ। বাজার মূলধন কমেছে ৪ শতাংশের ওপরে। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ায় লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৩৩ শতাংশের বেশি।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৭৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৮টির। আর ১৪টির দাম অপরিবর্তিত আছে। এ সময় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৮০ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৫ দশমিক শূন্য ৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি পতন হয়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকের। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে ১৫ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে আর ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৩৬ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১২ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯০ শতাংশ। সবকটি মূল্যসূচক কমলেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহের (২১ থেকে ২৫ জানুয়ারি) গড়ে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯৭০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে (১৪ থেকে ১৮ জানুযারি) প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭২৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৪২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা ৩৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে চার হাজার ৮৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় তিন হাজার ৬৩৭ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে এক হাজার ২১৪ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা ৩৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
সারাবাংলা/জিএস/ইআ