গাজায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধ করল ৯ দেশ
২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:২০
ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থায় (ইউএনআরডব্লিউএ) অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ ৯টি দেশ। গত ৭ অকক্টোবর ইসরাইলে চালানো হামাসের হামলায় সংস্থাটির কর্মীদের সহায়তার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশগুলো। তবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি। খবর বিবিসি।
ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘ইউএনআরডব্লিউএ গাজার প্রাথমিক মানবিক সংস্থা, যেখানে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য এটির উপর নির্ভরশীল।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএ’র কিছু কর্মী জড়িত ছিল— এমন অভিযোগে যুক্তরাজ্যসহ ৯টি দেশ সংস্থাটিতে অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। যদিও ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, তারা অভিযুক্ত কর্মীদের বরখাস্ত করছে।
ইউএনআরডব্লিউএ’র তহবিল স্থগিতকারী অপর দেশগুলো হলো— অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও সুইজারল্যান্ড।
গাজায় ইসরাইলের হামলায় শুরু করার পর লাখ লাখ বেসামরিক ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হন। এ সময় ইউএনআরডব্লিউএ গাজা জুড়ে নিজেস্ব সুবিধাগুলো ব্যবহার করেছে লক্ষাধিক বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয় দেয়।
হামাস হামলায় ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগের তথ্য সরবরাহ করেছিল ইসরাইল। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ইউএনআরডব্লিউএ’সহ জাতিসংঘের বিভিন্ন শাখাকে পক্ষপাতদুষ্ট, এমনকি তাদের বিরুদ্ধে ইহুদি-বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে আসছে।
গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর উপদেষ্টা মার্ক রেগেভ বিবিসি’কে জানান, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ‘তাদের (ইউএনআরডব্লিউএ) বেতনভুক্ত লোকজন’ জড়িত ছিল।
তিনি আরও বলেন, এমন তথ্য রয়েছে যে, ইউএনআরডব্লিউএ’র স্কুলে কর্মরত শিক্ষকরা হামলাকে ‘প্রকাশ্যে উদযাপন’ করেছেন। হামাসের বন্দুকধারীরা প্রায় ১ হাজার অধিক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। এছাড়া ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে।
মার্ক রেগেভ বলেন, ‘তাদের যা হামাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ইউনিয়ন আছে। আমি মনে করি এখনই সময় ইউএনআরডব্লিউএ এবং হামাসের মধ্যকার এই সংযোগগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘ তদন্ত করবে।’
গতকাল শনিবার (২৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে লাজারিনি বলেছেন, কয়েকজন কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সংস্থার তহবিল স্থগিত করায় তারা মর্মাহত। বিশেষ করে যখন একটি স্বচ্ছ স্বাধীন তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার করে অনুরোধ করেছে এবং ইউএনআরডব্লিউএ তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে।
১৯৪৯ সালে ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি গাজায় পরিচালিত জাতিসংঘের সবচেয়ে বড় সংস্থা। গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনিদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রদান করে সংস্থাটি। গাজার অভ্যন্তরে ইউএনআরডব্লিউএ’র প্রায় ১৩ হাজার কর্মী রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজায় চলমান ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৬ হাজার ২৫৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া ৬৪ হাজার ৭৯৭ জন আহত হয়েছেন। এদিকে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানায় ইসরাইল।
সারাবাংলা/এনএস
ইউএনআরডব্লিউএ ইসরাইল গাঁজা জাতিসংঘের ত্রাণ ও শরণার্থী সংস্থা ফিলিস্তিন