Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরিষার পাশাপাশি মৌ-চাষ, লাভের মুখ দেখছেন সবাই

আমজাদ হোসেন মিন্টু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৭

বগুড়া: কাহালু উপজেলায় মাঠজুড়ে এখন সরিষার হলুদ রঙের সমারোহ। মাঠে মাঠে চলছে সরিষার আবাদ। এই সুযোগে মৌ-চাষিরা মধু সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন মাঠে বসিয়েছে মৌ-বাক্স। এতে মৌমাছির মাধ্যমে সরিষার ফুলের পরাগায়ন হচ্ছে। ফলে একদিকে সরিষার উৎপাদন যেমন বাড়ছে, অন্যদিকে মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছে মৌ-চাষিরা। সমন্বিত এই চাষে সরিষা ও মৌ-চাষিদের উভয়পক্ষই লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরিষার ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিতি কাহালু উপজেলায় কৃষকদের মাঝে দিন দিন সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তিন বছরে এ উপজেলায় সরিষার আবাদ বেড়েছে দ্বিগুণ। উপজেলায় এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।

বিজ্ঞাপন

কৃষি বিভাগ বলছে, আমন ধান কাটার পরে ওইসব জমি বোরো আবাদের জন্য দুই তিন মাস ধরে ফেলে রাখা হতো। তবে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ এই জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষের পরামর্শ দেন কৃষকদের। সেইসঙ্গে কৃষকদের যথাসময়ে বীজ, সার ও কারিগরি সহায়তা দেন। আর কৃষকরা মেধা-শ্রম দিয়ে সরিষা চাষে মনোযোগী হন। এক পর্যায়ে সরিষায় ভরে উঠে কাহালুর দিগন্তজোড়া মাঠ। এই সরিষা ঘরে উঠতে সময় লাগে জাত ভেদে ৭০-৮০ দিন।

বাদশ মিয়া বলেন, ‘সরিষা চাষ করে আমরা লাভবান। খরচ অনেক কম। জমি পতিত থাকতো। আমরা সেই জমিতে সরিয়া চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি।’

খলিলুর রহমান বলেন, ‘সরিষা চাষে খরচ কম ফলন বেশি। অন্যান্য ফসলে ওষুধ দিতে হয়, কিন্তু সরিষায় ওষুধ দিতে হয় না। সরিষার জমিতে বোরো আবাদ করতে গেলে সার কম লাগে। সেচ দিলেই হয়ে যায়। সরিষায় রোগ বালাই কম। খরচ কম লাভ বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এক বিঘা সরিষা আবাদে খরচ হয় চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। আর বিঘা প্রতি ফলন হয় ছয় থেকে সাত মণ হয়। বিক্রি হয় ২৫ হাজার টাকা।’

বিজ্ঞাপন

সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহের জন্য মৌ চাষ করা হচ্ছে, ছবি তুলেছেন সারাবাংলার সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট হাবিবুর রহমান

এদিকে, মধু চাষী ময়েজ উদ্দিন বলেন, ‘সরিষার পাশাপাশি আমরা মধু উৎপাদন করছি। এই মধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যায়। আমরা অনলাইনেও মধু বিক্রি করে থাকি। পাইকারিতে প্রতিকেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি করি।’

কাহালু উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘আমন ধান কাটার পর জমি যেন ফেলে না রেখে যেন সরিষা চাষ করে সে বিষয়ে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি। সেইসঙ্গে যথাসময়ে বীজ, সার ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছি। ফলে এবার দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।’

তিনি জানান, এবার কাহালু উপজেলায় ৮২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ উপজেলায় সরিষার আবাদ বাড়ার পাশাপাশি মধু উৎপাদন হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌ-চাষিরা এখানে এসে মধু সংগ্রহ করছেন।

সারাবাংলা/পিটিএম

কাহালু উপজেলা বগুড়া মৌ-চাষ সরিষা চাষ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর