ছাড়পত্র পেতে ৩ হাজার টাকা লাগে যে স্কুলে!
৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে বেসরকারি একটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র (টিসি) দিতে এক ছাত্রীর অভিভাবককের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী অভিভাবক শাহাদাত হোসেন।
ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী এলাকার বাসন্তী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। শাহাদাত হোসেনের মেয়ে ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। সপ্তম শ্রেণিতে আরেক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ছাড়পত্র নিতে গেলে তাকে তিন হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
পেশায় নির্মাণ শ্রমিক শাহাদাত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির সময় ২ হাজার ৮০০ টাকা ফি নিয়েছিল। এবার তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিই। এ জন্য বাসন্তী স্কুল থেকে টিসি নেওয়ার জন্য আমি ডিসেম্বর মাসে তিনবার ও জানুয়ারি মাসে তিনবার স্কুলে যাই। তারা বারবার আমার কাছে ৩ হাজার ৩০০ টাকা টিসি ফি দাবি করতে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘অথচ বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এত টাকা নেওয়ার কথা নয়। আমি বারবার অনুরোধের পরও তারা অনড় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আমি তিন হাজার টাকা দিয়ে টিসি নিতে বাধ্য হই। অথচ তারা আমাকে কোনো রশিদও দেননি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাসন্তী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন কুমার পাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘রেগুলার করার জন্য সেশন ফি নেওয়া হয়েছে। সপ্তম শ্রেণিতে রেগুলার করে এরপর ওই শিক্ষার্থীকে টিসি দেওয়া হয়েছে। এখানে সিস্টেম এমনই। আমি আসার আগে থেকেই এমন সিস্টেম।’
টাকা নিয়েও কেনো রশিদ দেওয়া হয়নি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্কুলের সব টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়। এজন্য স্কুল থেকে কোনো রশিদ দেওয়া হয় না। টাকা নিলেও সেটা শ্রেণি শিক্ষকের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা হয়ে গেছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অলোক কুমার দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসে টিসি নিলে সেশন ফি নেওয়া হয় না। কিন্তু জানুয়ারি মাস থেকে টিসি নিলে সেশন ফি নেওয়া হয়। স্কুলের এটাই নিয়ম। কারণ, তখন বাচ্চাদের বই দেওয়া হয়। তবে কোনো বাচ্চা থেকে এরকম রশিদ ছাড়া ও অন্য কোনো উপায়ে ফি-র নামে বেশি টাকা নেওয়া হলে বা কোনো অভিভাবক ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা আমি দেখব।’
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘টিসি নিতে কেন এত টাকা দিতে হবে ? হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিসি নেওয়ার বিধান কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সরকার দেয়নি। অভিযোগ পেয়েছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কল দিয়ে যাদের কাছ থেকে টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে ফেরত দিতে বলেছি। না দিলে দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এছাড়া অভিযোগ যেহেতু এসেছে এটা নিয়ে তদন্ত কমিটি হবে।’
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম