গ্রাম পুলিশ নিয়োগে ‘অনিয়ম’, ইউএনওসহ ৭ জনের নামে মামলার আবেদন
৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৩
রংপুর: পীরগাছা উপজেলায় গ্রাম পুলিশ নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন মোশারফ হোসেন নামে এক চাকরিপ্রত্যাশী।
গত ১০ জানুয়ারি আদালতে মামলা দায়েরের আবেদন করলেও বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। মামলার বাদী মোশারফ হোসেন উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঘগোয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত হেলাল উদ্দিনের ছেলে।
মামলায় অন্য বিবাদীরা হলেন- উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রাম পুলিশ নিয়োগ ও বাছাই কমিটির সকল সদস্য ও সরকারের পক্ষে রংপুরের জেলা প্রশাসক। বাদীর আইনজীবী মহসীন আলী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ১৩ জন গ্রাম পুলিশ (মহল্লাদার) নিয়োগের জন্য ২০১৯ সালের ৫ ও ১৫ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই সময় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব না হওয়ায় গত বছরের ১৫ নভেম্বর পুনঃবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন।
বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযোদ্ধা/শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে মেয়ের ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে বলা হয়। গত ২ জানুয়ারি উপজেলা পরিষদ হল রুমে অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষায় বাদী মোশারফ হোসেনসহ ৬৫ জন প্রার্থী অংশ নেয়। সেদিনই বাছাই শেষে ১৩ জনকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে অভিযোগ ওঠে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদন করলেও অজ্ঞাত কারণে মোশারফ হোসেনকে নেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় কোটা পদ্ধতি অনুসরণ না করার অভিযোগ এনে গত ১০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন মোশারফ। একইদিন নিজেকে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদনকারী হিসেবে দাবি করে পীরগাছা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি।
মোশারফ অভিযোগ করে বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষায় আমি উত্তীর্ণ হলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আমাকে নেওয়া হয়নি। পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে অজ্ঞাত কারণে তড়িঘড়ি করে রাতেই ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।’
বাদীর আইনজীবী মহসীন আলী বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ নিয়োগে মোশারফ ছাড়া অন্য কোনো মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ছিল না। সর্বক্ষেত্রে নিয়োগে জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত।’
গ্রাম পুলিশ নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন ছুটিতে থাকায় এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, ‘যেহেতু মামলা করার অধিকার রয়েছে, তারা মামলা করেছেন। আমরা আমাদের জবাব আদালতে যথা সময়ে দেবো।’
সারাবাংলা/পিটিএম