রংপুরে বাণিজ্য মেলা বন্ধের দাবি, আধাবেলার ধর্মঘট ডাকল ব্যবসায়ীরা
৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:১৫
রংপুর: রংপুরে বাণিজ্য মেলা বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নগরীর সকল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মার্কেট, বিপণীবিতান, শপিংমলে ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া নগরীর সুপার মার্কেটের সামনে ব্যবসায়ীদের অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে রংপুর জেলা ও মহানগর দোকান মালিক সমিতি জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে এ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, রংপুরে কোনো শিল্পকারখানা নেই। অথচ শিল্পের প্রচারের নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার জন্য ঘন ঘন বাণিজ্য মেলা বসানো হচ্ছে। গতবছরের নভেম্বর মাসেও রংপুরে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ফের নতুন করে বাণিজ্য মেলা আয়োজনের নামে নিম্নমানের সামগ্রী বিক্রি করে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার পাঁয়তারা চলছে। বিশেষ মহলকে লাভবান করার জন্য এই আয়োজন করা হয়।’
মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘করোনাকালীন দুই বছর ব্যবসা বন্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল-অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যবসায়ীরা কর্মচারীদের বেতন, দোকানভাড়াসহ ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। এমন অবস্থায় বাণিজ্য মেলার নামে ব্যবসায়ীদের পথে বসানোর পাঁয়তারা চলছে। বাণিজ্যমেলা বন্ধ না করা হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে ব্যবসায়ী সমাজ।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলতাফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজ, মহানগর মালিক সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। এ সময় রংপুর নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, রোববার দুপুরে সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার নেতৃত্বে বাণিজ্যমেলা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতি।
ব্যবসায়ীরা জানায়, সর্বশেষ গত ১৯ অক্টোবর নগরীর ক্রিকেট গার্ডেন মাঠে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেছিলেন। রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বারের উদ্যোগে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রচার, নতুন ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে আর্থিক কর্মকাণ্ড বেগবান করতেই এই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। আগামী মাসে ফের মেলার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেলার আয়োজক মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন বলেন, ‘এখনো মেলার দিন-তারিখ নির্ধারণ করিনি আমরা। তবে আগামী মাসে আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছি। মেলায় ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আছে। এতে ব্যবসায়ীদের লোকসানের কোনো কারণ দেখছি না।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কেন হঠাৎ করে বিক্ষোভ করলেন, তাও জানি না। গত মেলায় ১০২ স্টলের মধ্যে ২০-২৫টি ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। বাকিগুলো ছিল ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীদের। ওই মেলায় কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হয়েছিল। তাই অনেকে অনুরোধ করেছেন, যাতে ফের মেলার আয়োজন করা হয়।’
সারাবাংলা/পিটিএম