‘সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সফল হবে মিয়ানমারের জনগণ’
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৫৭
ঢাকা: সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে মিয়ানমারের জনগণ বিজয় অর্জন করেন বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির জাতীয় ঐক্য সরকারের (এনইউজি) প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ও উপদেষ্টা কিয়াও জাও। তারা জয়লাভ করলে বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে তারা সহজ করবেন বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১ জানুয়ারি) ‘মিয়ানমারের বর্তমান সংকট এবং প্রতিবেশী অঞ্চলের উপর এর প্রভাব’ শীর্ষক সিপিএসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) এই আলোচনার আয়োজন করে। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, উন্নয়ন সংস্থা, দূতাবাস, মিডিয়া এবং এনএসইউ’র শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সরাসরি ও অনলাইনে এই আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- এনএসইউ’র সহকারী অধ্যাপক ড. রেমন্ড কুন-সান লাউ, এসআইপিজি’র সিনিয়র ফেলো ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সুলতান জয়নাল আবিদীনের আইন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অনুষদের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল হক এবং এসআইপিজি’র অধ্যাপক শহীদুল হক।
কিয়াও জাও বলেন, ‘সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে চলমান বসন্ত বিপ্লব সফল হবে। কারণ মিয়ানমারের জনগণ এখন ইতিহাসের অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। তার সরকার মিয়ানমারে সকল জাতিগত সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্ত করবে এবং বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনকে সহজ করবে।’
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিয়ানমারের চলমান সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ মিয়ানমারের একাধিক পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে।’
ড. রেমন্ড কুন-সান লাউ বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা মিয়ানমারে সামরিক জান্তার পদক্ষেপকে পরিবর্তন করবে না। এদিকে এই অঞ্চলে স্বার্থ সুরক্ষিত করতে মিয়ানমারকে তার বলয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে চীন। যা মিয়ানমার সংকটকে আরও জটিল করছে।’
শহীদুল হক বলেন, ‘ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী মিয়ানমার। কারণ এটিই একমাত্র দেশ যেটি স্থলপথে আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে তাদের ভৌগলিক সংযোগ প্রদান করে। সুতরাং মিয়ানমারের সঙ্গে ভারত তাদের সম্পর্ক আরও বাড়াতে চায়।’
ড. মাহবুবুল হক বলেন, ‘আসিয়ান দেশগুলো মিয়ানমার সংকট নিরসনে পদক্ষেপের ক্ষেত্রে বিভক্ত। সুতরাং এই ব্লকের দ্বারা কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কারণ আসিয়ান ‘অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা’র নীতি মেনে চলে। কিন্তু আসিয়ানের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের মূল নীতি সমুন্নত রাখতে মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তাদের কাজ করা উচিত।’
অধ্যাপক ড. এসকে তৌফিক এম হক বলেন, ‘কোনো প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারকে এ অঞ্চলের ভূ-রাজনীতির রণক্ষেত্র হিসেবে দেখতে চায় না। সব দেশ আঞ্চলিক শান্তি সুরক্ষায় একযোগে কাজ করবে বলে আশা করি।’
সিপিএস সমন্বয়কারী ড. আব্দুল ওহাবের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভাটি শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক ড. এসকে তৌফিক এম হক।
সারাবাংলা/এনএস