‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে বিশ্ব ইজতেমা’
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৫৪
ঢাকা: মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান তিনি।
বিশ্ব ইজতেমা-২০২৪ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ আশার কথা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তাবলীগ ও জামায়াতের বিরোধের কারণে এবারও দুইভাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে প্রথম পর্বের (জুবায়ের অনুসারী) ইজতেমা এবং ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে দ্বিতীয় পর্বের (সা’দ অনুসারী) ইজতেমা।
শেখ হাসিনা বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখবে এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাই।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ইসলামের উন্নয়ন, প্রচার, প্রসার এবং খেদমতে বহু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও মাদরাসা বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাবলীগ জামাতের জন্য কাকরাইল মসজিদে জমি দান করেন এবং টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে বিশ্ব ইজতেমার জন্য জায়গা বরাদ্দ দেন। তিনি কম খরচে হজ পালনের জন্য হিজবুল বাহার জাহাজ ক্রয় করেন এবং বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে হজযাত্রী প্রেরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা মুসলিম বিশ্বসহ আরব দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করেন। তার কূটনৈতিক দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে ওআইসি’র সদস্যপদ লাভ করে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশে ইসলামের উন্নতিকল্পে বহুবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, সকল জেলা এবং উপজেলায় মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক কালচারাল সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। মানবসম্পদ উন্নয়নে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দকে সম্পৃক্ত করে মসজিদের ইমামগণকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, কুরআনের শিক্ষা প্রচারের উদ্দেশ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় লাখ লাখ শিশুকে কুরআন শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৬৭ সাল থেকে প্রতি বছর রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ ইসলামের মর্মবাণী প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ইজতেমা বিশ্বের নানা প্রান্তের মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্যের এক অপূর্ব মিলনক্ষেত্র, যা ইসলামী সমাজ, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মহানুভবতার এক অতুলনীয় দৃষ্টান্ত।
আবহমানকাল ধরে বাংলাদেশের লালিত অসাম্প্রদায়িক চেতনা, অকৃত্রিম সরলতা ও অতিথিপরায়ণতা এবং সহিষ্ণুতার আলোকবার্তা ইজতেমায় আগত বিদেশি মেহমানদের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে যাবে বলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যাশা করেন। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে মহান আল্লাহর দরবারে দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও কল্যাণ এবং সমৃদ্ধি কামনা কামনা করেন তিনি।
সারাবাংলা/এনএস