ধর্ষকদের শাস্তি দাবিতে জাবিতে মশাল মিছিল
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:২৪
ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আবাসিক হলের রুমে আটকে রেখে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে মিছিল শুরু হয়। এটি মীর মশাররফ হোসেন হল, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র ও ছাত্রী হলগুলো হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজুল ইসলাম মেঘের সঞ্চালনায় সমাবেশে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগী সামিয়া বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব চলছে। এটি একদিনে তৈরি হয়নি। অনেক দিনের ফল গতকাল (শনিবার) মুস্তাফিজ দেখিয়েছে।’
‘একটা নবীন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে শুরুর দিন থেকেই শারীরিক ও মানসিক টর্চারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেটার ফলাফল আজকের এই মুস্তাফিজ। সে-ও গণরুম করেছিল এবং এসব টর্চার সহ্য করে আজকে ধর্ষকে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কখনোই সমস্যার মূলোৎপাটন করতে চায় না। বরং জিইয়ে রাখতে চায়।’
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। হল থেকে অছাত্রদের বের না করা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। ধর্ষকদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে, গণরুম উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতীতে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে এরকম নিপীড়ককে। এবারও যদি তা করে তাহলে এই প্রশাসনকে টিকতে দেওয়া হবে না।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফ সোহেল বলেন, ‘এটা আমাদের নিজেদের লড়াই। এই গণরুম কালচারের কারণে আমাদের সম্ভাবনাকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করা হয়েছে। শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে ভোগবিলাসের নামে মাদক তুলে দিয়ে এই ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে।’
‘সময় হয়েছে ঘাতকের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার, সময় হয়েছে কথা বলার। আমরা ধর্ষকদের কিংবা তাদের সহযোগীদের সামনে আঙুল তুলে বলব- এটা অপরাধ, এটা করা যাবে না। এখন ভয় পেলে চলবে না, সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
সমাপনী বক্তব্যে নাটক ও নাট্যতত্ত্বের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আগামীকাল (সোমবার) বেলা ১১টায় শহীদ মিনারে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে আমরা পোস্টারিং করব।’
আরও বক্তব্য দেন- নাটক নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অর্না মজুমদার, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী মনিকা ইয়াসমিন, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান লাবীব।
মিছিলের শুরুতে কয়েকজন শিক্ষকও অংশগ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন- প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী, অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী প্রমুখ।
সারাবাংলা/একে