সংসদ অধিবেশন: নতুন এমপিরা শিখছেন পুরানোদের কাছ থেকে
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৩
সংসদ ভবন থেকে: মুলতবি হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশন আবার কার্যক্রমে ফিরেছে চার দিন পর। অধিবেশনের দ্বিতীয় এই কার্যদিবসেই গঠিত হয়েছে ১২টি সংসদীয় কমিটি। এদিন ধন্যবাদ প্রস্তাব আনা হয় দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দেওয়া ভাষণের ওপর। পয়েন্ট অব অর্ডারেও কথা বলেন সংসদ সদস্যরা।
পুরানো সংসদ সদস্যদের পাশঅপাশি নতুন সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিও সংসদ অধিবেশনকে প্রাণবন্ত করে তোলে। অধিবেশন চলাকালে বিভিন্ন বিরতি সিনিয়র সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে থাকতে দেখা গেছে নতুন সংসদ সদস্যদের। তারা জানালেন, সংসদের নিয়ম-কানুন তারা জেনে নিচ্ছিলেন অভিজ্ঞদের কাছ থেকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠক বসে গত ৩০ জানুয়ারি। ওই দিনের কার্যক্রম শেষে অধিবেশন চার দিন মুলতবি রাখা হয়। দ্বিতীয় বৈঠক বসে আজ রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৩টার মধ্যে অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যরা প্রবেশ করেন। বিকেল ৪টা ৪৪ মিনিটে অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসের মতোই তার পা ছুঁয়ে সালাম করেন সিনিয়র ও নতুন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য।
মাগুরা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠে পদার্পণ করেছেন ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনিও অধিবেশনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয় তার। তবে একাধিকবার সাকিবের কাছে জিজ্ঞাসা করেও জানা সম্ভব হয়নি, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঠিক কী নিয়ে তার কথা হয়েছে।
মাগরিবের নামাজের বিরতির পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের দেখা গেছে সিনিয়র সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও গল্প করে সময় কাটাতে। সিনিয়র সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় নতুন সংসদ সদস্যদের কয়েকজনকে কাগজে নোট নিতেও দেখা গেল। স্বতন্ত্র ও নতুন কয়েকজন সংসদ সদস্য জানালেন, সংসদের নিয়ম-কানুন নিয়েই মূলত তারা অভিজ্ঞ ও প্রবীণ সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। জানার ও শেখার চেষ্টা করছেন, সংসদে কী করতে হবে না হবে।
এই বিরতিতে অনেক সংসদ সদস্যকেই তাদের জন্য নির্ধারিত ক্যাফেটারিয়ায় সময় কাটাতে দেখা যায়। সেখানে গিয়েও তারা একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। কেউ কেউ নোটিশ শাখায় তাদের প্রশ্ন জমা দেন।
দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের তুলনায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্যেই সংসদ নেতার পা ছুঁয়ে সালাম করার আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। এ সময় প্রত্যেকের সঙ্গেই কিছুক্ষণ করে কথা বলেন শেখ হাসিনা। এর মধ্যেই স্পিকারের আসন গ্রহণের ঘোষণা এলে প্রধানমন্ত্রী তার আসনে গিয়ে বসে পড়েন। অন্য সংসদ সদস্যরাও তখন নিজ নিজ আসনে চলে যান।
এদিন সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের বেঞ্চের প্রথম সারিতে ৯টি আসন ফাঁকা ছিল। মাগরিবের নমাজের বিরতির পর আসনগুলো পূর্ণ হয়। এ সময় সংসদ নেতা শেখ হাসিনাকে তার আসনে বসেই বিভিন্ন ফাইলপত্র দেখতে ও সই করতে দেখা যায়।
মাগরিবের নামাজের বিরতির পর অধিবেশন পুনরায় শুরু হলে প্রথমেই পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু। এরপর ৭১ বিধির আওতায় জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ করা নোটিশগুলো নিষ্পত্তি নিয়ে আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। এরপরই রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন সরকারি দলের চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী।
দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় বৈঠকে সংসদের দর্শনার্থী গ্যালারিতে কোনো দর্শনার্থীকে দেখা যায়নি। তবে ভিআইপি গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর