সীমান্তে কাটছে নির্ঘুম রাত, গোলাগুলি থামলেও কমেনি আতঙ্ক
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩২
কক্সবাজার: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি’র সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। রোববার সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত ২টা পর্যন্ত কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়েনের ধামনখালী সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরের ঢেঁকিবুনিয়া এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।
তবে সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে গোলাগুলির আর কোনো শব্দ শোনা যায়নি। তবে শব্দ না থাকলেও আতঙ্ক কাটেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
পালংখালীর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা আতংকে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। সকালে নতুন করে গোলাগুলির শব্দ শোনা না গেলেও মানুষের মাঝে এখনও আতঙ্ক কাটেনি।’
তবে সোমবার সকালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে ২/৩টির গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম।
এদিকে আরকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ জন। সোমবার সকাল পৌনে ৮টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দফতরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার বিজিপি’র সদস্যের মধ্যে ১৫ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশংকাজনক। তারা কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে সোমবার ভোর পর্যন্ত নতুন করে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৭ জনের কতজন আহত তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার দিনভর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অভ্যন্তরে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে গোলাগুলি অব্যাহত ছিল। এতে বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিজিবি তাদেরকে (বিজিপি) নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছে। বিজিপির আহত সদস্যের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির দুই সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থা আশংকাজনক। ওই দুই সদস্য হলেন- রি লি থাইন (২২) ও জা নি মং (৩০)।’
এদিকে অসমর্থিত একটি সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে আহত অবস্থায় বিদ্রোহী আরাকান আর্মির ৬ সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রবেশ করেন।
আহতরা রাখাইন রাজ্যের বুচিডং, টাংগো এবং ম্রাউ এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে দু’জনের বয়স ২৪, দু’জনের ২৩, একজনের ২০ এবং বাকি একজনের ২২ বছর বলে জানা গেছে।
তবে কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কায়সার হামিদ জানন, এ ধরনের কোনো খবর তাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ-খবর নিচ্ছেন।
সারাবাংলা/এমও