Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশ্ন ফাঁস: রামেবি অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের পরীক্ষা স্থগিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩০

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) অধিভুক্ত নার্সিং কলেজের বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। ফলে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রামেবির অধিভুক্ত নার্সিং কলেজগুলোতে বিএসসি ইন নার্সিং, বিএসসি ইন পাবলিক হেলথ নার্সিং (পোস্ট বেসিক) এবং বিএসসি ইন মিডওয়াইফারি (পোস্ট বেসিক) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি সম্ভব হয়নি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গত ১ জানুয়ারি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয় রামেবি কর্তৃপক্ষ। রামেবিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আনোয়ার হাবিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি জানানো হয়। এ নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বগুড়া নার্সিং কলেজের তিন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- আবদুল বারী সরকার, মোস্তানুর সুলতানা ও গুলনাহার খাতুন। রামেবিতে প্রশ্নপত্র তৈরির সময় তারা সেখানে ছিলেন বলে জানা গেছে।

রামেবি সূত্র বলছে, রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজ ও প্যারামেডিকেল কলেজ রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। রোববার অধিভুক্ত নার্সিং কলেজগুলোতে বিএসসি ইন নার্সিং, বিএসসি ইন পাবলিক হেলথ নার্সিং (পোস্ট বেসিক) এবং বিএসসি ইন মিডওয়াইফারি (পোস্ট বেসিক) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর জন্য সকল প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিলেন সংশ্লিষ্ট কলেজগুলো। কিন্তু তার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায়।

এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয় ওইসব কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে। অসন্তোষ সৃষ্টি হয় রামেবির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝেও। প্রশ্নপত্রের সার্বিক দায়দায়িত্ব হলো রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দফতরের। কিন্তু ওই শাখা থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যায় কীভাবে- এমন প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, এর আগেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে কয়েক বার। কিন্তু এসব নিয়ে কখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবারের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জমা পড়ে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। পাশাপাশি পরীক্ষা স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয় রামেবি কর্তৃপক্ষকে। এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে রামেবি কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে পরীক্ষা স্থগিত করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘রামেবির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাদের কারণে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জানুয়ারি প্রশ্নপত্র তৈরি হয়। বগুড়া নার্সিং কলেজের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক আবদুল বারী সরকার, মোস্তানুর সুলতানা ও গুলনাহার খাতুন প্রশ্নপত্র তৈরির সময় রামেবিতে ছিলেন। এরপর ৩০ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি রামেবির নিজস্ব পরিবহনে এই অঞ্চলের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ভল্টে ভল্টে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। রোববার থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। এর আগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আর ওই তিন শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

বগুড়া নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ আরশে আরা বেগম বলেন, ‘আমাদের আরও কয়েকজন শিক্ষক প্রশ্নপত্র প্রস্তুত করার সময় ছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় জানতে পেরেছে যে, তারা প্রশ্ন ফাঁস করেছেন। সে জন্য গত বৃহস্পতিবার তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় গঠন করা তদন্ত কমিটির চিঠিতে বিষয়টি আমি জেনেছি।’

এ বিষয়ে রামেবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনোয়ার হাবিবের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য (ভিসি) এ. জেড. এম মোস্তাক হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও তদন্ত করবে। তারা একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। এখন দেখা যাক কারা এর সঙ্গে জড়িত।’

এ সময় তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/ইআ

টপ নিউজ রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বরখাস্ত


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর