Wednesday 13 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দরপত্র ছাড়াই লাখ লাখ টাকার গাছ কেটে বিক্রি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩২

গত শনিবার কেটে ফেলা হয় গাছগুলো। ছবি: সারাবাংলা

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের গ্রামীণ ব্যাংক শাখা কার্যালয় চত্বরের ৪৮টি মেহগনি গাছ দরপত্র ছাড়াই কেটে ফেলা হয়েছে। কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়াই গাছগুলো ওই শাখার ব্যাবস্থাপক পূর্ণ চন্দ্র বর্মন নিজের ইচ্ছামতো গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ২০ লাখ টাকা দামের গাছগুলো এভাবে কোনো ধরনের নিয়ম-নীতির বালাই ছাড়াই কেটে বিক্রি করার ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে জাবরহাট ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বোদং লোকজন নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখা কার্যালয় চত্বরের মেহগনি জাতের অনেক পুরোনো গাছগুলো কাটতে শুরু করেন। জানাজানি হলে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

গতকাল মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাবরহাট ইউনিয়নের গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় গিয়ে দেখা যায়, কার্যালয় চত্বরটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেখানে কোনো গাছ নেই। কেটে ফেলা গাছের গুঁড়ি আর কিছু ডালপালা ও পাতা সেখানে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

ওই শাখার কর্মীরাই বলছেন, বন সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী প্রথমে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে তারপর উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কোনো সরকারি, বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হয়। কিন্তু জাবরহাট ইউনিয়নের গ্রামীণ ব্যাংক শাখার গাছগুলো কাটার ক্ষেত্রে ব্যাবস্থাপক পূর্ণ চন্দ্র বর্মন এই নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কাই করেননি। নিজের পকেট ভারী করার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের কাছে ৪৮টি মেহগনি গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি বেআইনিভাবে। তবে এ বিষয়ে ওই শাখার কোনো কর্মী নাম উল্লেখ করে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

জাবরহাট ইউনিয়নের গ্রামীণ ব্যাংক শাখার ব্যাবস্থাপক পূর্ণ চন্দ্র বর্মনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে আঞ্চলিক কার্যালয়ে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেই আমরা ইউএনওকে অবহিত করেছিলাম। তিনি তখন বলেছিলেন, যেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে করার কিছু নেই। বাকি গাছগুলো বন বিভাগের সঙ্গে থে আলোচনা করে প্রক্রিয়া অনুযায়ী কেটে ফেলার পরামর্শ দেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও রেঞ্জের অধীন পীরগঞ্জ বিটের বন কর্মকর্তা শাহজাহান আলী বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের কেউ গাছ কাটার বিষয়ে অনুমতি নিতে বা অবহিত করতে আমাদের কাছে আসেনি। তবে স্থানীয়রা বিষয়টি আমাদের জানিয়েছিল। আমরা জানার পরপরিই স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করি।

জানতে চাইলে পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রমিজ আলম বলেন, আমার কাছে তথ্য এসেছিল। গ্রামীণ ব্যাংকের ওরাও এসেছিল। আপাতত গাছ কাটা বন্ধ রাখতে বলেছি। বিধি দেখে পরবর্তী সময়ে নির্দেশ দেওয়া হবে।

সারাবাংলা/টিআর

গাছ কাটা গ্রামীণ ব্যাংক ঠাকুরগাঁও মেহগনি গাছ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর