এবার সব থেকে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৫:৩০
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বড় কথা হলো জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে গেছে এবং ভোট দিয়েছে। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পেরেছে। বাংলাদেশে ১৯৭৫ সালের পর থেকে যতগুলি নির্বাচন হয়েছে; এবারের নির্বাচন সব থেকে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ হয়েছে।’
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণভবনে গোপালগঞ্জ জেলার আওয়ামী লীগ, সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
নিজ নির্বাচনি এলাকার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনারা আমার এলাকায় নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি করা থেকে শুরু করে কাজ করেছেন। এটা সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা প্রার্থীর জন্য একটা দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে। সেই দৃষ্টান্ত আপনারা সৃষ্টি করতে পেরেছেন। অনেক প্রার্থী এটা অনুসরণ করেছে। এটা আমি সবার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সেটা তারা অনুসরণ করেছে।’
‘আজ সত্যি আমি খুব আনন্দিত। আপনারা এসেছেন এবং আপনারা ইচ্ছে করলে গণভবনের সবকিছু ঘুরেটুরে দেখতে পারেন। কারণ এটা আপনাদের বাড়ি, আপনাদের ঘর, আপনাদেরই জায়গা’, বলেও অবহিত করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের পদচারণায় গণভবনের মাটি আজ ধন্য হয়েছে। তবে আমাদের সামনের যাত্রাপথ এতো সহজ না। অনেক চক্রান্ত এই বাংলাদেশটাকে ঘিরে আছে।’
টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আজ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। বাংলাদেশের মানুষের আজ পেটে ভাত আছে। তারা চিকিৎসা পাাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ৩০ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছি। আজ আর বিদেশ থেকে পুরনো কাপড় এনে পরতে হয় না। এভাবে মানুষের কল্যাণেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এই কাজগুলি আরও আমাদের করতে হবে।‘
সবাই অনাবাদি জমিতে ফসল উৎপাদন করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণের দাম বেড়ে গেছে। অনেক টাকা দিয়ে আমাদের কিনে আনতে হয়। সার বীজ গম তেল, ভোজ্য তেল, জ্বালানি তেল গ্যাস; অনেক কিছু আমাদের বিদেশ থেকে কিনতে হয়। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম যেমন বেড়ে গেছে, সেই সঙ্গে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সব জিনিসের মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। কিন্তু সবাই যদি আমরা অনাবাদি জমিগুলি চাষ করে ফেলি, তাহলে আর এই খাদ্যের অভাব থাকবে না।’
পতিত জমি চাষের আওতায় জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক জায়গায় সমবায়ের মাধ্যমে যত রকম সহযোগিতা করা দরকার সেটা আমরা করবো এবং বাজারজাত করার ব্যবস্থাটাও সমবায়ের মাধ্যমে হবে। খাদ্যশস্য সংরক্ষণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। প্রত্যেক জেলায় জেলায় খাদ্যশস্য যাতে সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়েও সরকার কাজ করছে।’ এসব ক্ষেত্রে টুঙ্গিপাড়া যেন পিছিয়ে না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
যুব সমাজের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনমতে একটা পাস করেই চাকরির পিছনে ছুটবে না, নিজেরাই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবো। নিজেরাই চাকরি দেবে। নিজেরাই বস হবে। নিজেদের সেভাবে তৈরি করতে হবে। আত্মবিশ্বাসটা থাকতে হবে।’
‘আজ এখানে কোনো রাজনীতির আলোচনা করতে আসিনি। আপনাদের দাওয়াত দিয়েছি আপনারা এসেছেন। গণভবনের বেড়ানোর জন্য আপনাদের আমি দাওয়াত দিয়েছি। আজ যদি আমি প্রধানমন্ত্রী না হতাম তাহলে টুঙ্গিপাড়া যেয়েই থাকতে পারতাম। কারণ আমার একটাই আকাঙ্খা আছে যে আমি শেষ জীবনে টুঙ্গিপাড়ায় থাকবো। কিন্তু ওই আবার দায়িত্ব নিতে হলো, কিন্তু এখন পদ্মা সেতু হওয়াতে সুবিধা হয়ে গেছে। ঘন ঘন যেতে পারব। তারপরও আমি বলব, ওই জায়গায় আমার বাবা ঘুমিয়ে আছেন। দাদা-দাদী ঘুমিয়ে আছেন। স্বাভাবিকভাবে আমার মনটাও ওখানেই পরে থাকে’, বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করা এটাই আমার সৌভাগ্য। ওইটুকু সুযোগ পেয়েছি। অন্তত যখন এই দেশের মানুষের কল্যাণ করতে পারি মানুষের মুখে যখন হাসি ফোটে শুধু আমার এটাই মনে হয়, আমার বাবাও হয়ত তিনি বেহেশত থেকে দেখছেন। অন্তত তিনি জানবেন তার মানুষগুলি আর কষ্টে নেই।’
পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জসহ তার নির্বাচনি এলাকায় বিভিন্ন স্তরের নেতাদের বক্তব্য শোনেন।
সারাবাংলা/এনআর/এমও