Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গণভবনে মন খুলে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার নেতারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৩৬

ঢাকা: টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করে খোশমেজাজে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আবার ১৫ বছর ধরে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে সরকারে থাকার পরও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নানা কারণে ক্ষোভও রয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সামনে কথা বলার সুযোগে মন খুলে কথা বললেন টুঙ্গিপাড়ায় বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে সরকারের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি ক্ষোভও প্রকাশ করেন। গণভবনে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল এমন সূত্র সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞাপন

উপস্থিত সূত্র জানায়, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেফিদা আক্তার পদ্মা সেতু প্রসঙ্গ তুলে ধরে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ব্যবসায়ী বা বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর ওপারে শিল্পায়নের আহ্বান জানান।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিএম মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, টুঙ্গিপাড়াবাসী আপনাকে মায়ের চোখে দেখে, বোনের চোখে দেখে। আপনার কাছে চাওয়া পাওয়া আছে। আপনি টুঙ্গিপাড়াবাসীকে অনেক দিয়েছেন। তারপরও আপনি আমাদের মা আপনি আমাদের বোন— তাই আমাদের চাওয়া পাওয়া থাকবে। কিন্তু টুঙ্গিপাড়াবাসীর ভেতরে যেমন আনন্দ আছে, আবার একটা চাপা ক্ষোভও কাজ করে।

তিনি বলেন, আপনি টুঙ্গিপাড়ায় ইন্ড্রাস্টি করলে বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। অনেকে যায় টুঙ্গিপাড়ায়। মাস্টারপ্ল্যান করে। ছোট বেলা থেকে দেখেছি যে সরকারি আমলা…এখানে অনেক সরকারি আমলারা আছেন। যখন তাদের প্রমোশনের দরকার তখন তারা টুঙ্গিপাড়া যেয়ে মাস্টারপ্ল্যান করে। কিন্তু যার বাস্তবায়ন আর হয় না।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুব উন্নয়নে অনেক ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। ওই ট্রেনিং নিয়ে বেকাররা নিজেরাই কাজ করতে পারবে। কাজ করতে হবে। ধামাভরা চাকরি দেওয়া সম্ভব না। কাজেই নিজেরা ট্রেনিং নিয়ে নিজের কাজ নিজে করতে হবে। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করারও নির্দেশনা দেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে টুঙ্গিপাড়ার নেতারা আরও বলেন, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার ফলে অসংখ্য চাকরি হয়েছে। কিন্তু প্রতিবছর যে পরিমাণ ছেলেমেয়ে তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, সেই তুলনায় চাকরি অনেক কম। এ কথা সত্য অসংখ্য বেকার ছেলেমেয়ে টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু শতভাগ ছেলেমেয়েকে সরকারি চাকরির আওতায় আনা সম্ভব না। এটা কেউ পারবে না।

প্রধানমন্ত্রীকে নেতারা বলেন, সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছেন। এর একটি ইকোনমিক জোন টুঙ্গিপাড়ার যেকোনো জায়গায় করা যায় তাহলে বেকার ছেলেমেয়েরা যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবে। পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা টুঙ্গিপাড়ায় মানুষ। টুঙ্গিপাড়ায় যেন আরও উন্নয়ন হয় সেটা আপনি করবেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিংকন মোল্লা বলেন, আমি মনেকরি টুঙ্গিপাড়ার মানুষ শিক্ষায় পিছিয়ে আছে। আমি টুঙ্গিপাড়ায় একটি ক্যাডেট স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি জানাই। পাশাপাশি স্টেডিয়াম নির্মাণ করার দাবি জানাই।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল হক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দিকে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি ছাত্রলীগের উপস্থিত নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে ফটোসেশন করারও আবদার করেন।

সভার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি নিজ নির্বাচনি এলাকার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমার এলাকায় নির্বাচন পরিচালনার জন্য কমিটি করা থেকে শুরু করে যেভাবে কাজ করেছেন, এটা সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটা প্রার্থীর জন্য একটা দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে। সেই দৃষ্টান্তটা আপনারা সৃষ্টি করতে পেরেছেন। অনেক প্রার্থী এটা অনুসরণ করেছে। এটা আমি সবার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সেটা তারা অনুসরণ করেছে। আজকে সত্যি আমি খুব আনন্দিত। আপনারা এসেছেন এবং আপনারা ইচ্ছে করলে গণভবনের সবকিছু ঘরেটুরে দেখতে পারেন। কারণ এটা আপনাদের বাড়ি। আপনাদের ঘর। আপনাদেরই জায়গা।

সারাবাংলা/এনআর/আইই

টুঙ্গিপাড়া শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর