Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পরিত্যক্ত জিনিস কুড়ানোর আড়ালে দিনে রেকি, রাতে চুরি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানা এলাকায় একটি চুরির ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে নগরীর চকবাজার থানা এলাকার একটি বাসা থেকে ১২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরির চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

পুলিশ জানায়, সংঘবদ্ধ এ চোরচক্রই ১২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনা ঘটায়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, যেগুলো মাটির গর্তে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। গ্রেফতার ছয় জন সংঘবদ্ধ চোর চক্রের সদস্য। তাদের কেউ কেউ দিনে কাগজ কিংবা পরিত্যক্ত জিনিসপত্র কুড়ানোর আড়ালে বাসা-বাড়ি রেকি করে। এর পর রাতে সুযোগ বুঝে দলবদ্ধ হয়ে তারা বাসায় চুরি সংঘটিত করে।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি-দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান গ্রেফতার ছয় জনের বিষয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন।

গ্রেফতার ছয়জন হলেন- আরিফ হোসেন মেহেদী (২৬), মো. শরীফ (২০), মেহেদী হাসান রুবেল (২৩), সাইদুল ইসলাম রিগ্যান (২২), হান্নান হোসেন (২৩) ও রিয়াদ হোসেন (১৯)।

পুলিশ জানায়, নগরীর সদরঘাট থানার একটি বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরির ঘটনায় গত ৩ জানুয়ারি দায়ের হওয়া মামলায় জড়িতদের ধরতে অভিযানে নেমেছিল পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকা থেকে ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের একটি পাইপগান ও একটি কার্তুজ এবং বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার হওয়া আরিফ হোসেন মেহেদী জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য দেয়, তার হেফাজতে কিছু চোরাই স্বর্ণালঙ্কার আছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর ডবলমুরিং থানার বারেক বিল্ডিং মোড়ে সানাই সিনেমা হলের পেছনে কনকর্ড গ্রুপের একটি খালি জায়গায় মাটি খুঁড়ে প্রায় ৫২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার স্বর্ণালঙ্কারগুলো গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজার থানার মেহেদীবাগের আমিরবাগ হাউজিং সোসাইটির একটি বাসা থেকে চুরি হয়েছিল বলে জানান উপ পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান।

নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী সারাবাংলাকে জানান, গ্রেফতার আরিফ হোসেন মেহেদী উদ্ধার করা ৫২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ঢাকা থেকে চুরির করেছে বলে দাবি করে। তবে আমিরবাগ হাউজিং সোসাইটি থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণালঙ্কারের ছবির সঙ্গে মেলানোর পর পুলিশ নিশ্চিত হয় আরিফের দাবি সঠিক নয়, স্বর্ণালঙ্কারগুলো তারা আমিরবাগ থেকেই চুরি করেছে।

তিনি বলেন, ‘পরে আরিফ আমাদের কাছে আমিরবাগে চুরির কথা স্বীকার করে। সে জানায়, চুরির আগে শরীফ কাগজ ও প্লাস্টিকের বোতল কুড়ানোর ভান করে ওই বাসায় গিয়ে রেকি করে। তার কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে চুরি সংঘটিত করে। আরিফ, শরীফ, শাকিল ও পিচ্চি জাহিদ মিলে চুরি করে। এদের মধ্যে শাকিল চুরির পরদিনই মাদকের একটি মামলায় গ্রেফতার হয়। পিচ্চি জাহিদ এখনও পলাতক। আরিফ ও শরীফকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এ চক্রের গডফাদার মনির ও তারেক। তাদের দু’জনকে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করেছে।’

আরিফ ও শরীফ ছাড়া গ্রেফতার বাকি চার জন সংঘবদ্ধ ওই চক্রের সদস্য হলেও তারা আমিরবাগে চুরির ঘটনায় জড়িত ছিল না বলে জানান সহকারী পুলিশ কমিশনার অতনু চক্রবর্তী।

পুলিশের তথ্যানুযায়ী, আমিরবাগে চুরির পর আরিফ চট্টগ্রামের বাইরে চলে যায়। বৃহস্পতিবার সে চট্টগ্রামে ঢোকার তথ্য পেয়ে পুলিশ তাকে ধরতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। এক পর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তার নামে নামে বন্দর, ইপিজেড, ডবলমুরিং ও হালিশহর থানায় ১০টিরও বেশি চুরির মামলা আছে। শরীফের নামে দুটি অস্ত্র মামলা রয়ছে।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপ পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ চক্র চট্টগ্রাম নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে সংঘবদ্ধভাবে চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ দিনে টোকাই সেজে বিভিন্ন বাসা-বাড়ি রেকি করে। এজন্য তাদের আলাদা একটি টিম আছে। যেসব বাসায় লোক থাকে না কিংবা নির্জন এলাকা, সেসব জায়গা রেকি করে তারা অন্য সদস্যদের জানায়। ছোট শিশুদেরও তারা এ কাজে ব্যবহার করে।’

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

টপ নিউজ দিনে রেকি রাতে চুরি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর