সরকার গঠনের মুখোমুখি ইমরান-শরিফ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১০:৪৬
পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা না হলেও দেশটির সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। এতে করে দেশটির রাজনৈতিতে নতুন সংকট দেখা দিয়েছে। যদিও কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠন করার মতো আসন পায়নি। এদিকে নির্বাচনের তিন দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সব আসনের ফল ঘোষণা করতে পারেনি পাকিস্তনের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। ২৬৪টি আসনের মধ্যে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৫৬টি আসনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এখনো ৮টি আসনের ফল বাকি রয়েছে। খবর এনডিটিভি ও দ্য ডন।
নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এখনো প্রকাশিত না হওয়ায় রোববার দেশব্যাপী বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে পিটিআই। পাকিস্তানের ‘সব প্রতিষ্ঠানকে’ ভোটে পিটিআই’র ফলাফলকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির বর্তমান চেয়ারম্যান গহর খান।
এক সংবাদ সম্মেলনে গহর খান বলেন, শনিবার রাতের মধ্যে ভোটের পূর্ণাঙ্গ ফলাফল প্রকাশ করা না হলে দলটি আজ নির্বাচনের ফলাফল বর্জন ও সরকারি অফিসের বাইরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করবে।
তবে নির্বাচনের ফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার জন্য ইন্টারনেটের সমস্যাকে দায়ী করেছে ইসিপি। এজন্য ভোট কেন্দ্রগুলো থেকে ফলাফল পাঠাতে নির্বাচন কর্মকর্তারা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
কারাবন্দি ইমরান খান ও তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ইনসাফকে (পিটিআই) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তবে পিটিআই সমর্থনকারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সর্বশেষ তথ্যমতে ৯৩টি আসনে জয়লাভ করেন তারা।
এদিকে সেনাবাহিনীর সমর্থিত নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (এন) মাত্র ৭৩টিতে জয় পেয়েছে। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) জিতেছে ৫৪টি আসন। জমিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম (এফ) পেয়েছে ৩টি আসন। এছাড়া অন্যান্য দলগুলো পেয়েছে ৩৩টি আসন।
এই পরিস্থিতিতে ইমরান খান এবং তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উভয়েই গতকাল শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিজয় ঘোষণা করেছেন। ফলে পরবর্তী সরকার কে গঠন করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এমন সময় এই সংকট দেখা দিল যখন দেশটির একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দ্রুত নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
নির্বাচনে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এই জয় প্রায় ২৫ কোটি মানুষের দেশটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জনপ্রিয়তার দিকে নির্দেশ করে।
এদিকে পিটিআই সমর্থিত বেশ কয়েকটি স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনের ফলাফলে জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন। ইতোমধ্যে তারা দেশটির উচ্চ আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ভোটে কারচুপির অভিযোগে আরও বেশ কয়েকজন প্রার্থী আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।
ইমরান খানের দলকে সরকার গঠন থেকে দূরে রাখার জন্য নওয়াজ শরিফ এবং বিলাওয়াল ভুট্টো এক হতে আলোচনা করছেন। কিন্তু তাদের সম্মিলিত শক্তিতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য আরও ৬টি আসন দরকার। এক্ষেত্রে অন্যদলগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সারাবাংলা/এনএস