স্ত্রী-সন্তানসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যার দায়ে এএসআইয়ের মৃত্যুদণ্ড
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৫
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে নিজের স্ত্রী ও সন্তান এবং এক তরুণকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার অপরাধে পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (বরখাস্ত) সৌমেন রায়কে মৃত্যুদণ্ড সাজা দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমীন এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত সৌমেন রায় মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ের সুনীল রায়ের ছেলে। এ মামলায় জামিন নিয়ে তিনি পলাতক রয়েছেন।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারপক্ষের কৌঁসুলী (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী রায়ের তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পুলিশের এএসআই সৌমেনকে মৃত্যুদণ্ড সাজা দিয়েছেন আদালত। তবে উচ্চ আদালত থেকে অন্তবর্তীকালীন জামিন নেওয়ার পর ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে বেলবন্ড দাখিল করে সৌমেন কারামুক্ত হয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ১৩ জুন সকাল সোয়া ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টমস মোড় এলাকার নাজ ম্যানশন মার্কেটের সামনে নিজের স্ত্রী আসমা খাতুন (২৫) ও আসমার প্রথম পক্ষের ছেলে ছেলে রবিন এবং আসমার কথিত প্রেমিক শাকিলকে (২৮) সরকারি অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করেন এএসআই সৌমেন রায়। এ ঘটনায় পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে সার্ভিস রিভলভার, গুলি ও ম্যাগজিনসহ আটক করে।
রাতে এএসআই সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে হত্যা মামলা করেন নিহত আসমা খাতুনের মা হাসিনা বেগম। পরদিন ১৪ জুন বিকেলে কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. এনামুল হকের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সৌমেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিশিকান্ত সরকার তার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাহিনী থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় সৌমেনকে।
নিহত আসমার মা ও মামলার বাদী হাসিনা বেগম বলেন, আদালত সৌমেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। কিন্তু সে তো পালিয়ে গেছে। তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।
সৌমেন রায় ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে উন্নীত হন। ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগ দেন তিনি। সেখান থেকে মিরপুর থানার হালসা ক্যাম্প, বাগেরহাট থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন সৌমেন।
সারাবাংলা/টিআর