মার্কিন বাবা ও বাংলাদেশি মায়ের মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:০৩
ঢাকা: দুই শিশু সন্তানকে নিজেদের হেফাজতে পেতে আমেরিকান বাবা গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল এবং বাংলাদেশি মা ফারহানা করিমের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার পারিবারিক আদালতকে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
একইসঙ্গে আমেরিকান বাবা গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল সপ্তাহে দুইদিন তার দুই সন্তানকে দেখতে যেতে পারবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে। বাবা-মায়ের সুবিধাজনক স্থানে দেখার স্থান নির্ধারণ করতে বলেছেন আদালত।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ও আইনজীবী সজীব মাহমুদ আলম। ফারহানা করিমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে দুই শিশুসন্তানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর রিট করেন শিশুদের আমেরিকান বাবা গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল।
ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২০ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল দিয়ে দুই শিশুকে (একজনের বয়স তিন বছর এবং অন্যজনের বয়স এক মাস) নিয়ে তাদের মা ফারহানা করিমকে ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। এ অনুসারে শিশুদের নিয়ে ফারহানা করিম আদালতে হাজির হন। সে সময় শিশুদের বাবা গ্যারিসন রবার্ট লুটরেলও আদালতে উপস্থিত হন।
পরে আদালত আমেরিকান বাবাকে সন্তানদের সপ্তাহে দুই দিন দেখতে পারবেন বলে আদেশ দেন। এবং এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এ সময়ের মধ্যে শিশুদের জিম্মা নিয়ে পারিবারিক আদালতে তাদের বাবা ও মা পৃথক মামলা দায়ের করেন। যা এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
এরপর শুনানির ধারাবাহিকতায় আজ হাইকোর্ট দুই শিশুকে নিজদের জিম্মায় পেতে ঢাকার পারিবারিক আদালতে তাদের দায়ের করা মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
এ সময়ে আমেরিকান বাবা সন্তানদের সপ্তাহে দুই দিন দেখতে পারবেন এমন আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আইনজীবীরা জানান, গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল আমেরিকার নাগরিক। ২০১৮ সালে বাংলাদেশি নাগরিক ফারহানা করিমকে বিয়ে করেন। তাদের আমেরিকাতে বাড়ি আছে। প্রথমে একটি বাচ্চা হয়। কিন্তু এ বছর জুন মাসে ওনার স্ত্রী বাংলাদেশে চলে আসেন। এসে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর উনি উদ্বিগ্ন হয়ে যান। এ ছাড়া পুরান ঢাকার একটি কাজী অফিস থেকে তালাকনামার নোটিশ আমেরিকার ঠিকানায় পাঠান তার স্ত্রী। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হন তার স্ত্রী। কিন্তু নোটিশ দেখে অক্টোবর মাসে গ্যারিসন বাংলাদেশে চলে আসেন। এসে ফারহানা করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেন। সেটি না পেরে দুই শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল হাইকোর্টের রিট দায়ের করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ