Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পেঁয়াজের দাম শিগগিরই কমবে— জানালেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৫৭

ঢাকা: কয়েকদিন ধরেই দেশের প্রায় সব বাজারে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে দেশি জাতের পেঁয়াজের সরবরাহ কম, অন্যদিকে আমদানি করা পেঁয়াজে ঘাটতি রয়েছে। ফলে ভোক্তা পর্যায়ে পেয়াঁজের দাম বাজার ভেদে কেজিপ্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানালেন, দেশি জাতের পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। শিগগিরই এই বাড়তি দাম কমে যাবে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৮ লাখ টনের কাছাকাছি। এই চাহিদার ৭০ শতাংশই দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে মেটানো হয়। বাকি চাহিদা পূরণ হয় আমদানির মাধ্যমে। আর এই ঘাটতি পেঁয়াজের বেশিরভাগ আমদানি হয়ে থাকে ভারত থেকে। এ ছাড়াও মিয়ানমার, মিশর, তুরস্ক ও চীন থেকেও পেঁয়াজ আমদানি করে সরকার। কিন্তু গত দুই বছর ধরে ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে তারা বাংলাদেশে রফতানি সীমিত করেছে। ফলে দেশের বাজারে অস্বাভাবিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরে দেশে ৩৬ দশমিক ৭৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগের বছর প্রায় ৩৪ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এবার বছরের প্রথম দিকে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও আট মাস পর এসে সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমানে দেশে উৎপাদিত পেয়াঁজ বাজারে আসার সময় হয়ে এলেও বাজারে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের প্রায় সব জেলায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।

শ্যামবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী মোসলেউদ্দীন সারাবাংলাকে জানান, বছর শেষে দেশে পেঁয়াজের যে সংকট দেখা দেয় তা পূরণ করা হয় মূলত আমদানির মাধ্যমে। তবে সেই সময়টাও খুব বেশি না। কারণ এর মধ্যে দেশি পেঁয়াজ বাজারে চলে আসে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের চেয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ কম। যে কারণে ভারত থেকেই বেশি পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। তবে এবার ভারতের পেঁয়াজ না আসায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।’

একই কথা বলেছেন নবাবগঞ্জের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমরা তো পর্যাপ্ত পেঁয়াজ পাচ্ছি না। যে কারনে দাম বেড়েছে।’

আর বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিবি) বলছে, দেশি পেঁয়াজের বর্তমান দাম গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ১৭১ শতাংশের বেশি। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো কোনো দোকানে ১১০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে সেগুলো মানের দিক থেকে খুব একটা ভালো না।

গোপীবাগ বাজারের ব্যবসায়ী শাহজাহান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার এখানে পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি। কারণ পেঁয়াজগুলা বেশ আগের কেনা ছিল।’ তারই পাশের দোকানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায় করে।’

পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘বাজারে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। সেটা আশা করি শিগগিরই পূরণ হয়ে যাবে। দেশি জাতের পেঁয়াজ দ্রুতই বাজারে চলে আসবে।’

উল্লেখ্য, গত বছরও দেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়। তখন দেশে অন্তত দুইটা মৌসুমে যেন পেঁয়াজ উৎপাদন করা যায় সে বিষয়ে উপায় খোঁজা হচ্ছিল সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে। তবে তা আলোচনা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এবারও বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেই আলোচনা সামনে এসেছে।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর