সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
২৪ মে ২০১৮ ০৮:৪৬
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
সাতক্ষীরা: ঘুষ ও দুনীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসের। দালাল ধরে অথবা চুক্তিতে কোনো ঝামেলা হয় না। তবে যারা সাধারণভাবে পাসপোর্ট বানতে যান তাদের হয়রানির শেষ থাকে না। পুরো পাসপোর্ট অফিস জিম্মি করে রেখেছে পাসপোর্ট দালালরা। দালাল ছাড়া পাসপোর্ট তৈরি করাতে পারে না সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. আবু সাঈদ যোগদানের পর থেকে অনিয়ম ও দুনীতি বেড়েছে সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসে। পরপর দুবার বদলির আদেশ হলেও তিনি তদবীর করে তা প্রত্যাহার করেছেন বলে জানিয়েছেন পাসপোর্ট অফিস সূত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, কাগজপত্র সব কিছু ঠিকঠাক করে গেলে প্রথমে হেল্প ডেস্ক থেকে বলবে আপনার ফরমে ভুল আছে। কোথা থেকে ফরম পূরণ করেছেন। এরপর তারা একটি নিদিষ্ট জায়গা দেখিয়ে বলবে ওখান থেকে ফরম পূরণ করে নিয়ে আসেন। সেখানে ফরম পূরণ করতে গেলে তিন থেকে চার শত টাকা দিয়ে ফরম পূরণ করতে হয়। এরপর সেখানে গেলে দালাল বা অফিসের পিয়ন দেখিয়ে বলবে উনাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের সঙ্গে কথা বললে পাসপোর্ট প্রতি এক হাজার ৫০ টাকা খরচ হিসেবে দিতে হয়। যারা নগদ টাকা দিতে পারবে তাদের পাসপোর্টের সব কাজ পাঁচ মিনিটের মধ্যে হয়ে যায়। আর যারা টাকা দিতে না পারবে না তাদেরকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয়।
শহরের মুনজিতপুর গ্রামের আমিনুর রহমান জানান, তিনি তার চাচির জন্য পাসপোর্ট করতে গেলে নানাভাবে হয়রানির শিকার হন।
তিনি বলেন পাসপোর্ট অফিসের এডির নিয়োগকৃত দালালরা আসলে তাদের পাসপোর্ট তাড়াতাড়ি হয়। আর যারা দালালের মাধ্যমে না আসে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। যারা এডির দালালের মাধ্যমে আসেন তাদের সব্বোর্চ সময় লাগে পাঁচ মিনিট।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসে টাকা দিলে সব হয়। এখানে এডির কথামত সব হয়। তিনি সকাল ১০ টার ফাইল জমা দিয়ে পাসপোর্ট পেয়েছেন বিকাল তিনটার সময়।
আশাশুনি উপজেলার আতিকুর রহমান জানান, তিনি আড়াই মাস আগে পাসপোর্ট করেছেন। তিনি এখনও পাসপোর্ট হাতে পাননি। দালালের মাধ্যমে বাড়তি টাকা দিয়ে পাসপোর্ট করেছিলেন যাতে পাসপোর্টটি দ্রুত হাতে পান। এখন এডির নিয়োগকরা দালালরা বলছে পাসপোর্ট দ্রুত নিতে গেলে আরও এক হাজার টাকা বাড়তি দিতে হবে। এই টাকাটা এডি স্যারের দিলে স্যার ঢাকায় দ্রুত কথা বলে পাসপোর্ট এনে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান জানান, আমরা পাসপোর্ট অফিস মনিটর্রিং করছি। সুনিদিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক মো. আবু সাঈদ সাংবাদিকদের জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটি সঠিক নয়। দালালরা টাকা নিলে তার কিছুই করার থাকে না বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, আমি থাকি অফিসের ভিতরে, বাহিরে কে বাড়তি টাকা চাইলো এটা আমার দেখার বিষয় না।
সারাবাংলা/এমআই