ক্যাসিনোকাণ্ড: গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাময়িক বরখাস্ত
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:৫২
ঢাকা: দুদকের দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে’কে সাময়িক বরখাস্ত করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বর্তমানে তিনি বরিশাল গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে কর্মরত। এর আগে তিনি ঢাকায় গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে তথ্যটি জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, উৎপল কুমার দে’র বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কর্তৃক দাখিলকৃত অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালতে গৃহীত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৮ (২০১৮ সনের ৫৭ নম্বর আইন) এর ৩৯ (২) অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। বরখাস্ত থাকাকালে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন।
চার মাস আগে এই প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ করা হলেও এতদিন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ক্যাসিনোকাণ্ডে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। সেসময় ক্যাসিনো ও অন্যান্য অবৈধ মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধানে নামে দুদক। এতে নাম আসে গণপূর্ত অধিদফতরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী উৎপল কুমার দে’র।
২০২০ সালের ৫ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ সংস্থাটির কর্মকর্তা নেয়ামুল আহসান গাজী বাদী হয়ে উৎপল কুমার ও তার স্ত্রী গোপা দে’র বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। বিতর্কিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে ৭ কোটি ৮০ টাকার সম্পদ অর্জন করার কথা বলা হয় মামলায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে তা নিজেদের ভোগ দখলে রাখেন। পরে এসব সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সময়ে রূপান্তর/স্থানান্তর/হস্থান্তর করে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় এবং মানি-লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
আরও বলা হয়, গোপা দে’র নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে বলে তদন্তে প্রমাণ হয়। প্রাপ্ত তথ্যপ্রমাণ ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গোপা দে ও তার স্বামী উৎপল কুমার দে প্রত্যক্ষ যোগসাজসে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে ছয় কোটি ৬২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৫৪ টাকার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, উৎপল কুমার দে একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে দুর্নীতি এবং বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ এক কোটি ১৮ লাখ ১৭ হাজার ৯০৩ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। তিনি তা নিজ ভোগ দখলে রাখেন। তদন্তকালে আসামি উৎপল কুমার দের নামে অর্জিত সম্পদের বিপরীতে তার বেতন-ভাতা ছাড়া অন্য কোনো সুনির্দিষ্ট বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম