২ দফায় দেশে ফিরলেন মিয়ানমারে ৩৩০ নাগরিক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:০৩
কক্সবাজার: মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া দেশটির ৩৩০ নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) প্রধানের উপস্থিতিতে তাদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৬৫ জন করে দুই ধাপে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে মিয়ানমারে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ইনানীতে অবস্থিত নৌবাহিনীর জেটিঘাট থেকে জাহাজে করে পাঠানো হয় প্রথম ধাপের ১৬৫ জন মিয়ানমার নাগরিককে। পরে বিকেল ৪টার দিকে একই ঘাট থেকে জাহাজে করে পাঠানো হয় বাকি ১৬৫ জনকে।
বিজিবি জানিয়েছে, মিয়ানমারের যে ৩৩০ জনকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে ৩০২ জন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য। বাকিদের মধ্যে চারজন তাদের পরিবারের সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং বাকি চারজন বেসামরিক নাগরিক।
মিয়ানমারের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর সময় উপস্থিত ছিলেন বার্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রামু বিজিবি সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসেন কবিরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রত্যাবাসন কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘সীমান্তে বিজিবি সবসময় সতর্ক রয়েছে। কোনো রোহিঙ্গা নাগরিককে আর অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’
মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটিতে থেকে বিজিপি সদস্যসহ অন্যরা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে থাকেন। পরে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল কক্সবাজারের টেকনাফ ও বান্দরবানের ঘুমধুমের দুটি স্কুলে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বান্দরবানের ঘুমধুম হাইস্কুলে থাকা ১৬০ বিজিপি সদস্যকে ছয়টি বাসে করে ইনানীর নৌবাহিনী জেটিঘাটে নিয়ে আসে বিজিবি। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা হাইস্কুল থেকে বাকিদের একই জায়গায় নিয়ে আসা হয় আরও ছয়টি বসে করে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে স্পিডবোটে করে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুলিশ কর্নেল মায়ো থুরা নাউংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি বিজিপি দল ইনানীর নৌবাহিনী জেটিঘাটে আসে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ের উপস্থিতিতে বিজিবির কাছ থেকে নিজ দেশের ৩৩০ নাগরিককে তারা বুঝে নেন।
প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার দেখভাল করতে সকাল থেকে ইনানীতে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমারবিষয়ক পরিচালক মো. রাকিবুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব মো. রাশেদ হোসেন চৌধুরী, বিজিবির অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান ও পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/টিআর