Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নদীতে সেতু নির্মাণে কম পিলার ব্যবহারের তাগিদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:০১

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী [ফাইল ছবি]

ঢাকা: নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মো. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নদীতে সেতু তৈরির ক্ষেত্রে যাতে কম পিলার থাকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব শুধু নৌপরিবহন বা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নয়; নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব প্রতিটি মানুষের। এ বিষয়ে সমন্বয় দরকার। দেশে প্রতিনিয়ত ডেভেলপমেন্টের কারণে নদীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদেরকে বর্তমান বাস্তবতা নিয়ে ভাবতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘ডিটারমিনেশন অব স্ট্যান্ডার্ড হাই ওয়াটার লেভেল, স্ট্যান্ডার্ড লো ওয়াটার লেভেল এবং রি-ক্লাশিফিকেশন অব ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের ফলাফল চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সর্বপ্রথম ২০১০ সনে নদ-নদীর উপর পরিকল্পিতভাবে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের উদ্দেশ্যে একটি বিধিমালা জারি করা হয়। প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সনে ওই বিধিমালায় একটি সংযোজনীও যুক্ত করা হয়। এর আগে ৪০ বছরে এরকম বিধিমালা কেন হয়নি? নদীকে খাল, খালের উপর কালভার্ট দিয়ে নদীকে সংকুচিত করা হয়েছে। এখন কালভার্ট এর নিচে নালাও নাই। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষা নদী দখল হয়ে যাচ্ছে।’

‘আমরা পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছি। দুই-তিন বছরে জলাবদ্ধতা হচ্ছে না; এটি ভালো দিক। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বলেছেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ঢাকার চারপাশে রেল, রোড ও নৌপথে যোগাযোগের কথা বলেছেন। যোগাযোগকে মাল্টিমোডাল করতে হবে। রেল, রোড ও নৌপথ যাতে থাকে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেতুতে প্রথমে রেল সংযোগের বিষয় ছিলনা। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নির্দেশনার আলোকে রেললাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে। রেল, সড়ক ও নৌপথ গুরুত্বপূর্ণ। ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে।’ ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন-মানুষের শিরায় শিরায় রক্তপ্রবাহ না থাকলে মানুষ মারা যায়, তেমনি নদীর নাব্যতা না থাকলে নদী মরে যাবে।’

বিজ্ঞাপন

‘উচ্ছেদ অভিযান মানুষের চোখ খুলে দিয়েছে। মানুষ এখন নদী নিয়ে ভাবছে। মানুষ এখন নদীতে ময়লা ফেলার আগে ডান-বামে তাকায়। এটি সফলতা। আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষ কাঠামোর উন্নয়নের দিকে ভাবতে হবে। দেশের ডেভলাপমেন্টের ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ’ বলেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এর আগে ১৯৬৭ সনে এবং ১৯৮৯ সনে নদীর ‘হাই ও লো লেভেল’ নিয়ে সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছিল। ওই সমীক্ষা দু’টি করেছিল বিদেশী সংস্থা। এবার আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান আইডব্লিউএম এই সমীক্ষার কাজ করেছে। এর ফলে প্রমাণ হয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানে ও সক্ষমতায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ নদ-নদীর ওপর পরিকল্পিতভাবে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের উদ্দেশ্যে বিধিমালা (সংশোধিত) তৈরি করবে। সে বিধিমালায় যাতে কোন স্ট্রাগল তৈরি না হয়; সেটি হবে সবার জন্য ফলপ্রসু এবং সবার জন্য সুবিধাজনক। নদীর কথা চিন্তা করে জাহাজগুলোর হাইট নির্ধারণ করতে হবে। ব্রিজের হাইটের চেয়ে নদীতে পিলারের কারণে সিলট্রেশন হয়ে যাচ্ছে। নদীতে ব্রীজ তৈরির ক্ষেত্রে যাতে কম পিলার থাকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামাল, বিআইডব্লিউটিএ’র সদস্য প্রকৌশল মোহাম্মদ মনোয়ার উজ জামান। আইডব্লিউএম-এর নদী ও পানি বিশেষজ্ঞ ফারহানা আখতার কামাল সমীক্ষা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন করেন।

সারাবাংলা/জেআর/একে

নদীর ওপর সেতু পদ্মাসেতু পিলার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর