কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সেরা উদীয়মান প্রতিবেদকে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন সারাবাংলার কুবি করেসপন্ডেন্ট মোহাম্মদ রাজীব।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রয়ারি) বিকালে বিজ্ঞান অনুষদের কন্ফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এ পুরস্কার দেন।
এ সময় কুবি সাংবাদিক সমিতির আরও ছয় প্রতিবেদককে পুরস্কার দেন অতিথিরা। বর্ষ সেরা প্রতিবেদক নির্বাচিত হয়েছেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধি জুবায়ের রহমান, সেরা প্রতিবেদকে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি নাঈমুর রহমান রিজভী, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন দৈনিক শেয়ার বিজের প্রতিনিধি মোহাম্মদ শাহীন আলম, তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন চৌধুরী মাসাবিহ। সেরা উদীয়মান প্রতিবেদকে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন আজকের দৈনিকের প্রতিনিধি তুষার ইমরান এবং তৃতীয় স্থান হয়েছেন দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিনিধি চাঁদনী আক্তার।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের উপস্থিতিতে কুবি সাংবাদিক সমিতির সদ্য বিদায়ী কমিটির নেতারা নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। এর আগে, কুবিসাস’র বার্ষিক প্রকাশনা ‘সংকট সন্ধিক্ষণে গণমাধ্যম: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’র মোড়ক উন্মোচন করেন পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির স্লোগান ‘সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল’। তবে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থাকা এত সহজ না। এটা ফেব্রুয়ারি মাস বাঙালির জীবনের একটা মাহেন্দ্রক্ষণ। আড়াই হাজার বছরের বাঙালির যে ইতিহাস, সেই ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সময় ১৯৪৮ ও ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করার। সত্যের পথে অবিচল থাকতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভালো-মন্দ পাশাপাশি থাকে। সেখানে থেকে আমাদের ভালোকে বেছে নিতে হবে। আজ কুবিসাস’র ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। যা অত্যন্ত গৌরবের একটি দিন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ বছরে যত অর্জন রয়েছে, সেই অর্জনের পিছনে সাংবাদিকদের অনেক অবদান রয়েছে। আমাদের বড় বড় অর্জনগুলো জাতি জানতে পারে সাংবাদিকদের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অসংগতি ও সাফল্য গণমাধ্যমে তুলে ধরতে আহ্বান জানাই।’
প্রধান আলোচক পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ে দেওয়া বক্তব্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি আলোচনায় আসেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বর্তমানে শুধু এই উপাচার্য নয়, অনেক উপাচার্যের এমন ঘটনা রয়েছে। মূলত মেধাবীরা উপাচার্যের পদে আসতে চায় না। যার কারণে বর্তমানে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককে বহিষ্কার খুবই নিন্দনীয় একটি ঘটনা। এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে নেতিবাচক প্রভাব তা সমাজেও পড়ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা এমন থাকবেই তবুও আপনাদের কাজ করতে হবে। সাংবাদিকদের ঝুঁকি নিতেই হবে। সাংবাদিকদের কিছু কিছু বিষয়ে অ্যাক্টিভিসস্ট হতে হবে। কেননা সাংবাদিকরা জনগণের জনমত তৈরি করে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দৈনিক যায়যায়দিনের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মোহাম্মদ ইকবাল মুনাওয়ার (রুদ্র ইকবাল)। এতে আরও বক্তব্য দেন সাবেক রেজিস্ট্রার ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল হক। এতে কুবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে বক্তব্য দেন।
সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইউসুফ আকাশের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও পিআইবি’র পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মুহা. মহিউদ্দিন মাহি। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা জেলায় কর্মরত গণমাধ্যমে সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
