রাউজানে ‘হামলা ও ধ্বস্তাধস্তি’র মধ্যে প্রবাসীর মৃত্যু
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাউজানে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া এক ব্যক্তির ওপর অতর্কিতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলা ও ধ্বস্তাধস্তির মধ্যে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার পরিবারের দাবি, বিএনপির সমর্থক হওয়ায় তার ওপর প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা করেছে।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাউজান পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাজীপাড়া জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। মৃত মো. মুছা (৪৫) পৌরসভার দেওয়ান হাজীপাড়ার বাসিন্দা। তবে তিনি হাটহাজারী উপজেলার মদনহাটে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন।
মুছার বড় ভাই তৌফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে জানান, মুছা গত ১৫ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে থাকেন। দুমাস আগে তিনি দেশে ফেরেন। তবে থাকতেন শ্বশুরবাড়িতে। ৫ মার্চ তার ওমানে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। এ জন্য মা-বাবার করব জিয়ারত করতে নিজ গ্রামে গিয়েছিলেন।
‘মসজিদ থেকে জুমার নামাজ পড়ে আমার ভাই বের হয়। মসজিদে শ খানেক মুসল্লি ছিলেন। তাদের কাছে শুনেছি, কতগুলো ছেলে গিয়ে তাকে অতর্কিতে মারধর শুরু করে। সে নিজেকে বাঁচানোর জন্য ধ্বস্তাধস্তি করে। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করতে না পেরে লুটিয়ে পড়ে। মসজিদের বারান্দাতেই তার মৃত্যু হয়েছে,’— বলেন তৌফিকুল ইসলাম।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন সারাবাংলাকে জানান, ধ্বস্তাধস্তির মধ্যে মুছা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে তার মৃত্যুর কারণ ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ উল্লেখ করা হয়েছে। শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন তারা পাননি।
তবে হামলার অভিযোগ ওঠায় মৃতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানান।
কাদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি হয়েছে— জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘মুছা একসময় বিএনপি’র রাজনীতিতে যুক্ত ছিল। দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে ফিরে আসা মুছাকে দেখে একসময়ের তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তাদের সঙ্গে ঘটনা ঘটেছে।’
মুছার ভাই তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৫ বছর আগে আমার ভাই বিএনপির সমর্থক ছিল। সে সন্ত্রাসী ছিল না, কারও সঙ্গে কোনোদিন মারামারি করেনি, তার নামে থানায় একটা জিডিও নেই। শুধুমাত্র বিএনপির সমর্থক হওয়ার কারণে তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে।’
কারা হামলা করেছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এটা জানি না। মুসল্লিরা সবাই দেখেছেন। পুলিশ তাদের জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবে। রাউজানে থেকে আমরা কারও নাম বলতে চাই না।’
ওসি জাহিদ বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মুছার মৃত্যুর কারণ বলা যাবে। এরপরও কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।’
পারিবারিক আলাপ-আলোচনা করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর