Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চবি

সারাবাংলা ডেস্ক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলা দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে সুনির্দিষ্ট সংখ্যা কেউ এখনও নিশ্চিত করেনি।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শাহ আমানত হলের সামনের সড়কে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রথমে সংঘাতে জড়ায়। এরপর সেটা ছড়িয়ে পড়ে, যা প্রায় রাত ৮টা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এরপর পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বিজ্ঞাপন

সংঘর্ষে জড়িতরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) নেতাকর্মী। সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং সিএফসি’র নেতাকর্মীরা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে ‘বড় নেতা’ মানেন বলে ক্যাম্পাসে আলোচনা আছে।

ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, প্রথম দফা সংঘর্ষের পর সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে সিএফসি’র নেতাকর্মীরা শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে অবস্থান নিয়েই পরস্পর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয় এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় দু’গ্রুপের নেতাকর্মীদের কয়েকজনের হাতে দেশিয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র দেখা যায়।


অভ্যন্তরীণ তুচ্ছ বিভিন্ন ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার রাতেও চবি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগের এ দুই উপগ্রুপের নেতাকর্মীরা। এরপর থেকেই দু’পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছিল বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উত্তেজনার জেরে শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর দুই আবাসিক হল থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর বিকেলে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা স্ব স্ব হলের সামনে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। প্রায় দু’ঘণ্টা  ধরে সংঘর্ষের পর পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় ‍উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীদের হলে প্রবেশ করানো হয়।

কিন্তু এরপর আব্দুর রব হলে অবস্থান করা সিএফসি গ্রুপের আরেকটি পক্ষ এসে সিক্সটি নাইনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এর জের ধরে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়।

জানতে চাইলে চবি প্রক্টর ড. নুরুল আজিম শিকদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উভয়পক্ষকে হলে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরই অপর একটি অংশ এসে যোগ দেয়। তখন আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত ৮টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রক্টরিয়াল বডির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।’

বারবার সংঘাতে জড়িত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এতটাই অসহনশীল যে তারা আমাদের কোনো কথাই শুনতে চায় না। তবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সংঘর্ষের পর প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে তল্লাশি শুরু করেছে বলে প্রক্টর জানান।

সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সাইদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) স্টেশনে এক শিক্ষার্থীকে মারধরকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। তবুও আমরা আমাদের ছেলেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি। কিন্তু আজ তারা রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে উসকানি দেয়। এরপর আবারও সংঘর্ষ হয়েছে।’

সিএফসি গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, ‘সিক্সটি নাইনে কোনো নেতা নেই। তাদের কেউ কাউকে মানে না। আজ (শুক্রবার) আমাদের কর্মীরা জুমার নামাজ পড়ে ফেরার সময় সিক্সটি নাইনের কর্মীরা ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মারে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার ঝামেলা শুরু হয়। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের বিষয়টি অবহিত করেছি।’

সারাবাংলা/আরডি/এমও

ছাত্রলীগ রণক্ষেত্র চবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর