শিশুদের আগ্রহ আর ছোটাছুটিতে মুখর বইমেলার শিশুপ্রহর
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫২
ঢাকা: বইমেলার শিশুচত্বর অংশের পাশেই ‘বাবুই প্রকাশনী’র স্টল। স্টলের সামনে সাজিয়ে রাখা হয়েছে কয়েকটি বাবুই পাখির বাসা। তা দেখে এক শিশুর প্রশ্ন, এগুলো কী? সঙ্গে থাকা তার ফুফু বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বিষয়টা আসলে কী! —শিশুদের এমন নানান প্রশ্ন, উত্তর, আগ্রহ, ছোটাছুটিতে মুখর হয়ে আছে বইমেলার শনিবারের শিশুপ্রহর।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের কালী মন্দিরসংলগ্ন শিশুচত্বরের আশেপাশে দেখা যায়— মা-বাবার হাত ধরে মেলায় এসেছেন অসংখ্য খুদে পাঠক। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকেও মেলার শিশুচত্বরে গিয়ে দেখা গেছে, শিশুমঞ্চে আনন্দে মেতে আছে অসংখ্য শিশু। উপভোগ করছেন শিশুপ্রহরের অন্যতম আকর্ষণ সিসিমপুরের মঞ্চ।
সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা, বিকাল সাড়ে ৩টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সিসিমপুরের এই প্রদর্শনী রাখা হয় মেলায় আসা শিশুদের জন্য। সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, টুকটুকি, ইকরি, শিকু এবং জুলিয়ার মজার মজার কথা গল্প আর নাচ-গানে মেতে থাকতে দেখা যায় শিশুদের।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়— সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোর যে সময়জুড়ে সিসিমপুরের শো’ চলে, সে সময়ে শিশুতোষ বইয়ের স্টলগুলো থাকে ফাঁকা। শো’ শেষেই আবারও শিশুদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয় স্টলগুলো।
দুই সন্তানকে নিয়ে মেলায় এসেছেন সাবিনা খাতুন নামের একজন। পেশায় সরকারি চাকুরে এই নারী জানিয়েছেন— যান্ত্রিক শহরে শিশুদের এমন উন্মুক্ত পরিবেশে বই, পড়া, সিসিমপুরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পারার দিকটি ইতিবাচক।
তিনি বলেন, ‘এখনকার শিশুরা অনেক বেশি গ্যাজেট ওরিয়েন্টেড। বইমেলা এর মাঝে একটা স্বস্তির নাম। অন্তত কাগজ-কলম, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করানো যায় শিশুদের। আমি চেষ্টা করি প্রতি শনিবার নিয়ে আসার। শুক্রবারের তুলনায় ভিড় কম থাকে শনিবারে।’
সাবিনার দুই সন্তানের একজন পাঁচবছর বয়সী সায়েম শাহরিয়ার। কথা বলতে শত চেষ্টা করেও তার মনোযোগ আকর্ষণ করা গেল না। তার নজরে কেবল সিসিমপুরের শো।
রাফিন মোহাম্মদ নামের এক শিশুর সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। দুইটি বই কিনবে সে! উচ্ছ্বসিত স্বরে রাফিন বলল—‘দুইটা বই কিনব। কার্টুন, স্পাইডার ম্যান…’
এদিকে, শিশুতোষ বইয়ের স্টলগুলোতে কথা বলে জানা যায়, বিক্রয় আর পাঠকের উপস্থিতি; সব মিলিয়ে আশান্বিত তারা।
বাবুই, প্রগতি, ফুলঝুরি, নলেজ, দ্বৈতাসহ বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় কর্মীরা জানিয়েছেন, উপস্থিতি আর বিক্রয়, কোনোটির অবস্থাই মন্দ নয় তেমন!
দ্বৈতা প্রকাশনীর একজন বিক্রয় কর্মী সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিশুপ্রহরে স্বাভাবিকভাবেই বিক্রি বেশি থাকে। বই কেনার আগ্রহ আছে শিশুদের। বিষয়টি ভালো লাগে।’
তাকদুম প্রকাশনীর একজন বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘উপস্থিতির কথা বলতে গেলে বলতে হবে উপস্থিতি ভালোই। বিক্রয়ের পরিমাণও খারাপ নয়। আমরা আশাবাদী। এই সংখ্যা বাড়বে।’
সারাবাংলা/আরআইআর/এমও