‘আমরা এখন নিঃস্ব, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন’
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:২৪
কুবি: ‘আমরা এখন নিঃস্ব, আপনারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। না হয় আমার ছোট ভাইকে বাঁচানো যাবে না।‘ এভাবেই নিজের আকুতি জানান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইরফান উল্লাহর বড় ভাই মুহিবুল্লাহ। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার তিনমাস পেরিয়ে গেলেও হাসপাতালের বেড থেকে মুক্তি মিলেনি ইরফানের।
গত বছরের ৩ নভেম্বর ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়ে ঢাকাগামী তিশা বাসের ধাক্কায় আহত হয়ে বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ইরফান। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের জেলার সাতকানিয়া উপজেলায়। তার বড় ভাই কিংবা মাকে কোনো প্রশ্ন করা হলে অঝোরে কান্না করেন তারা। তিন মাস ধরে ইরফানকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন বড় ভাই মহিবুল্লাহ। হাসপাতালটি যেন তাদের নিত্যদিনের বাড়ি হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, দুর্ঘটনার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও ইরফান উল্লাহর শারীরিক অবস্থার তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। টানা তিন মাস আইসিইউতে রাখার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। তবে জ্ঞান না ফেরার কারণে কাউকে চিনতে পারছে না ইরফান। এমনকি শরীরের নিচের পচা অংশ শুকায়নি।
বিভাগ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, তাদের ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এক লাখ ৭১ হাজার টাকা দিয়েছেন, বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠন থেকে প্রাপ্ত অর্থ এক লাখ ৬৪ হাজার টাকা এবং বাস মালিক দিয়েছে ১ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা সহযোগিতা পেয়েছেন তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত আইসিইউ’র বিল ছাড়াই ২৩ লাখ টাকা খরচ করেছে ইরফানের পরিবার। আইসিইউ’র বিল প্রায় ২৭ লাখ টাকা। যার বেশির ভাগ এখনো অপরিশোধিত। চিকিৎসা বাবদ প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
বড় ভাই মুহিবুল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসন, ডিপার্টমেন্ট, সংগঠন আমাদের তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করেছে। কিন্তু তা দিয়ে চিকিৎসার সামান্য কাজ শেষ হয়েছে। এখনো ২৭ লাখ টাকা বাকি রয়েছে। সামনে কত টাকা লাগে জানি না। কোনো রাস্তা খোঁজে পাচ্ছি না। কী করব বুঝতে পারছি না। আপনারা সবাই এগিয়ে আসলে আমার ছোট ভাই হয়ত স্বাভাবিক একটা জীবন ফিরে পাবে।‘
সারাবাংলা/এমআর/এনএস