Saturday 07 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বন্দির মৃত্যু : জেল সুপারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫৯ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০১:৪৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এক বন্দির মৃত্যুর ঘটনায় সিনিয়র জেল সুপারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা বোয়ালখালী থানার ওসিসহ ৮ পুলিশ সদস্যও আছেন।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম সিনিয়র স্পেশাল জজ ড. জেবুননেছা বেগমের আদালতে মামলার আবেদন করেন ওই বন্দির স্ত্রী পূরবী পালিত।

মৃত রুবেল দের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের দক্ষিণ জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামে।

মামলায় যাদের আসামি করার আবেদন জানানো হয়েছে, তারা হলেন- বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আছহাব উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু মুসা, সাইফুল ইসলাম ও রিযাউল জব্বার, কনস্টেবল কামাল ও আসাদুল্লাহ, থানায় সেসময় দায়িত্বরত ডিউটি অফিসার এবং কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন, জেলার এমরান হোসেন মিয়া, ডেপুটি জেলার নওশাদ মিয়া, আখেরুল ইসলাম, সুমাইয়া খাতুন, মো. ইব্রাহিম ও কারা ওয়ার্ড মাস্টার।

বিজ্ঞাপন

মহানগর দায়রা জজ আদালতের কর্মকর্তা দীপেন দাশগুপ্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে মামলার আবেদন জমা রাখা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর আবেদনকারির উপস্থিতিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে আদেশ প্রচার করা হবে বলে আদালত নির্ধারণ করেছেন।’

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৭ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। রাত ৮টায় তার বিরুদ্ধে মদ উদ্ধারের ভুয়া মামলা সাজানো হয়। রাত ৯টার দিকে পুলিশ আবেদনকারীর মোবাইলে কল দিয়ে রুবেলকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।

টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার দেখিয়ে ভূয়া মামলা করা হয় অভিযোগ করে আবেদনে বলা হয়, পরদিন আদালত রুবেলকে হাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এ সময় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রুবেলের পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য কারাগারে যান। কারারক্ষীরা মুমূর্ষু অবস্থায় রুবেলকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে আসেন। তখন রুবেলের কপালে, ডান চোখের ভ্রুয়ের ওপর রক্তাক্ত কাটা জখম এবং ‍মুখমণ্ডলে নীল ফোলা জখম দেখা যায়। তার মুখ দিয়ে অনবরত লালা ঝরছিল। প্রচণ্ড আহত ও নিস্তেজ অবস্থায় কথা বলার শক্তি তার ছিল না। ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায় পূরবী খবর পান, তার স্বামী কারাগারে মারা গেছেন।

আবেদনকারীর আইনজীবী মিঠুন বিশ্বাস সারাবাংলাকে জানান, হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ১৫ (২) ধারায় মামলা গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর পুলিশ রুবেলকে মারধর করে নির্যাতন চালায়। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ৪ জানুয়ারি আদালত জেল সুপারকে রুবেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন আর রাতেই তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। জেল কর্তৃপক্ষ এ দায় এড়াতে পারেন না। গ্রেফতারের সময় রুবেল পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। কিন্তু পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়ার দায় ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা এড়াতে পারেন না।’

তবে বোয়ালখালী থানার ওসি মো. আছহাব উদ্দিন গ্রেফতারের পর রুবেলকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘বোয়ালখালীর পাহাড় থেকে রুবেলকে চোলাই মদসহ গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে কেউ মারধর কিংবা নির্যাতন করেনি। পুলিশকে নাজেহাল করতেই এ মামলা করা হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে কারা কর্মকর্তাদের বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।

সারাবাংলা/আরডি/একে

কারাগার টপ নিউজ বন্দির মৃত্যু

বিজ্ঞাপন

বিশেষ নাটক ‘লাভ লুপ’
৭ জুন ২০২৫ ১৭:৩৬

আরো

সম্পর্কিত খবর