৮০-৮৫ শতাংশ অর্থ পাচার হচ্ছে আমদানি-রফতানির আড়ালে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৪৯
ঢাকা : বিদেশে অর্থপাচারের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশই হচ্ছে আমদানি-রফতানির আড়ালে। ব্যাংকিং চ্যানেলে ‘আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসের’ মাধ্যমে এসব অর্থপাচার হয়। ব্যাংক যদি এটি বন্ধে সহযোগিতা না করে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও সহযোগিতায় ১০ দেশের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সংস্থাটির প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এসব কথা বলেন। এ সময় বিএফআইইউর নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম, বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগের পরিচালক সারোয়ার হোসেন, বিএফআইইউর অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘বাণিজ্যের (আমদানি-রফতানি) আড়ালে ব্যাংকিং চ্যানেলে আন্ডার ইনভয়েস ও ওভার ইনভয়েসের মাধ্যমে অর্থপাচার হচ্ছে। এর মাধ্যমে পণ্য মূল্যের চেয়ে বেশি দেখিয়ে অর্থ পরিশোধ করা হয়। এই বিপুল পরিমাণ মানি লন্ডারিংয়ের সিংহভাগ হচ্ছে ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক যদি এটা বন্ধে সহযোগিতা না করে তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘ই-কমার্সের মাধ্যমেও অর্থ পাচার হয়। কিন্তু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে বিএফআইউ ব্যবসার লাইসেন্স দেয় না। পাচার হয়ে যাওয়ার পর তথ্য দেওয়া হয়, তখন করার কিছু থাকে না। একবার মানি লন্ডারিং (অর্থপাচার) হলে তা ফেরত আনা কঠিন। পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও সহযোগিতার জন্য ১০ দেশের সঙ্গে এমওইউ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
অর্থপাচার বন্ধে ব্যাংকগুলোর বড় ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে বিএফআইইউ প্রধান বলেন, ‘আমদানি-রফতানি তথ্য যাচাই-বাছাই করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তদারকির কারণে মানি লন্ডারিং কমছে। তবে অর্থপাচার বন্ধে ব্যাংকগুলোর বড় ভূমিকা থাকে। তারা প্রতিটি এলসি যাচাই-বাছাই করলে, তথ্য দিলে অনেকাংশেই বন্ধ হবে।’
মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘মানি লন্ডারিং একটা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম। এখানে বহু পক্ষ, বহু দেশ জড়িত। আমার দেশের আইনের মতো আরেক দেশের আইন এক নয়। এখানে কিছু আছে সিভিল ল’ কান্ট্রির দেশ, কিছু কমন ল’ কান্ট্রির দেশ। তবে একটা উদাহরণ আমাদের কাছে আছে, সিঙ্গাপুরে যে টাকা পাচার হয়েছিল, ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার, সেটা ফেরত এনেছি।’
উল্লেখ্য ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে মোট ১৪ হাজার ১০৬টি। এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার ৫৩৫টি। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৫৭১টি, ২০২০-২১-এ ছিল ৫ হাজার ২৮০টি। এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে সন্দেহজনক কার্যক্রম হয়েছিল ৩ হাজার ৬৭৫টি এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এমন লেনদেন ও কার্যক্রম হয় ৩ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম