ঢাকা: ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ভাল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তারা জানত নির্বাচনে আমি জিতে আসব। নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো উদ্বেগও নেই। বেশিরভাগ আলোচনা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক। ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশকে এক বিলিয়ন ইউরো দেবে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে জার্মানির মিউনিখ সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রথমে সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন এবং পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
মিউনিখ সফরে বিশ্ব নেতাদের কেউ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোন মন্তব্য করেছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘না, নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো উদ্বেগও নেই, কোনো প্রশ্নও নাই। নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। বেশিরভাগ আলোচনা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক। আমি সবসময় যেটা বলেছি— আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি, আপনারা আসেন আমাদের এখানে বিনিযোগ করেন। যারা যে বিষয়ের উপর পারদর্শী, সেখানে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা জানত নির্বাচনে আমি জিতে আসব। যারা চায় নাই তারাই কথা ওঠায়, তারাই প্রশ্ন তুলে। এক দেশে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে ১২ থেকে ১৩ দিন সময় লাগলেও সেই নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার। আর বাংলাদেশে নির্বাচন শেষ হওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল এসে গেল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে দেশ ফলাফল দিতে পারল, সেটা ফ্রি-ফেয়ার না? এই রোগের কোনো ওষুধ আমাদের কাছে নাই। শক্তি আমাদের জনগণ। আমি সেটাই বিশ্বাস করি।’
ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপীয়ান দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের ভাল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের এক বিলিয়ন ইউরো দেবে। আমাদের এখন যত প্রজেক্ট করব, সেগুলো যেন জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হয়। তাহলে এটাও আমরা কাজে লাগাতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এটাই প্রথম সংবাদ সম্মেলন। এ সময় মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২৪’এ যোগদানসহ জার্মানি সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪’এ যোগ দিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি জার্মানি যান এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরেন। এ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।