দেশ এক গভীর সংকটে পড়েছে: রিজভী
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:০২
ঢাকা: ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশ এক গভীর সংকটে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর দেশ এক গভীর সংকটে পতিত হয়েছে। চিহ্নিত কতিপয় পুলিশ, আমলা, আর সরকারি দলের টাকা পাচারকারী সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্র ছাড়া দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন অবৈধ সরকারের বিপক্ষে। চর দখলের মতো রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে জনগণকে ক্রীতদাসে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা ছাড়া প্রতিটি মানুষ আজ নিরাপত্তাহীন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি অতিক্রম করছে। মানুষের জান-মাল ও জীবন-জীবিকার কোনো নিরাপত্তা নেই। নারী-শিশু নির্যাতন ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। নতজানু সরকারের কারণে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এই অবস্থায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
রিজভী বলেন, ‘আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে পাঁচ বছর নয়, হতে পারে পাঁচ মাসেই ফ্যাসিবাদ মুক্ত হবে বাংলাদেশ। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরই, কেবল আমাদের পক্ষে দেশ-বিদেশের সমর্থন এসেছিল। এরপর যুদ্ধ করেই আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করেছি। এবারের লড়াই দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষায় লড়াই। এ লড়াইয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
তিনি বলেন, ‘লাগামহীন দুর্নীতি লুটপাট আর টাকা পাচারের কারণে দেশে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। ব্যাংকগুলো প্রায় দেউলিয়া। একদিকে ডলার সংকট অন্যদিকে তারল্য সংকটে বিপর্যয়ে পড়েছে ব্যাংকিং খাত। আওয়ামী দুর্নীতিবাজ চক্র দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুললেও অর্ধাহারে, অনাহারে সারাদেশের অধিকাংশ মানুষ। কয়েকদিন পরেই পবিত্র রমজান। অথচ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে। এরপর এখন আবার গ্যাস— বিদ্যুতের দাম বাড়ানো যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।’
রিজভী বলেন, ‘জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করেছে। সুতরাং দেশে এখন জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল কোনো সরকার নেই। দেশ-বিদেশে বর্তমান সরকারের পরিচয় ‘ডামি সরকার’। প্রশাসন, সিভিল সোসাইটি কিংবা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার যারা দেশের সংকট মোকাবেলায় যাদের কার্যকর ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে, তাদের অতিরিক্ত সুবিধা, প্রলোভন কিংবা ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী দুর্নীতিবাজ চক্র ছাড়া কৃষক শ্রমিক, নিম্ন মধ্যবিত্ত এমনকি অনেক মধ্যবিত্ত কিংবা স্বল্প আয়ের মানুষ অর্থাৎ দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ এখন সংকটে। সুতরাং, বর্তমানে দেশে চলমান যে সংকট, এই সংকট বিএনপি কিংবা গণতন্ত্রের পক্ষের দলগুলোর একার সংকট নয়। অধিকাংশ সংবাদপত্র কিংবা গণমাধ্যমের মালিকানা মাফিয়া চক্রের দখলে থাকায় জনগণের সংকট-দুঃখ-দুর্দশার বাস্তব চিত্র সংবাদপত্রে প্রতিফলিত হচ্ছে না।’
সারাবাংলা/এজেড/এনএস