Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কলমাকান্দার মহাদেও নদীর বালুমহালের ইজারা স্থগিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:১৮

ঢাকা: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ৮ নম্বর রংছাতি ইউনিয়নের সন্ন্যাসীপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মহাদেও নদীতে বালুমহালের ইজারাসংক্রান্ত সব কার্যক্রম এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ সম্পন্ন করে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসককে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক সম্পূরক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতে বেলার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

পরে বেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার ৮ নম্বর রংছাতি ইউনিয়নের সন্ন্যাসীপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মহাদেও নদীতে বিদ্যমান ‘ওমরাগাঁও, হাসনায়াগাঁও ও বিশাউতি’ নামে বালু মহালের ইজারা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল একটি রিট করে বেলা।

রিটে ভূমি সচিব, পরিবেশ সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক, ও পুলিশ সুপার, নেত্রকোনার পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক, কলমাকান্দারং উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিবাদী করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে একই বছরের ১৩ জুন আদালত মহাদেও নদী, নদী সংলগ্ন ফসলি জমি, স্থানীয় বাজার, বসতবাড়ি, বাগান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বৃক্ষাদি রক্ষার ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন বিধায় তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।

সেইসঙ্গে বালু উত্তোলনের ফলে মহাদেও নদী, নদীর প্রতিবেশগত ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীর সম্পদের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ধারা ৭ অনুযায়ী নিরুপণের ও ইজারা গ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তির কাছ থেকে আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং কেন মহাদেও নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা ও এর যথাযথ ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

এ ছাড়া, আদালত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সহকারী পরিচালককে মহাদেও নদীর অবস্থা সম্বলিত প্রতিবেদন প্রস্তুত ও ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ আদেশ অনুসারে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর মহাদেও নদীতে বালু উত্তোলন সংক্রান্ত ইজারা বাতিল করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি কোনোরূপ হাইড্রোগ্রাফিক ও ভূতাত্ত্বিক সার্ভে, পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব নিরূপণ না করেই গত ২৮ জানুয়ারি মহাদেও নদীতে বিদ্যমান মামলাভুক্ত ‘ওমরাগাঁও, হাসনায়াগাঁও ও বিশাউতি’ নামে বালুমহাল ইজারার উদ্দেশে দরপত্র আহ্বান করা হলে বেলা ইজারা দরপত্রের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন দাখিল করে।

ওই আবেদনের শুনানি শেষে আজ আদালত মহাদেও নদীতে বিদ্যমান ‘ওমরাগাঁও, হাসনায়াগাঁও ও বিশাউতি’ নামে বালুমহালের ইজারা দরপত্রসংক্রান্ত সব কার্যক্রমের ওপর এক মাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

ইজারা স্থগিত মহাদেও নদী