কক্সবাজার: বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন সমুদ্র সৈকতে একের পর এক ভেসে আসছে সংরক্ষিত প্রজাতির ডলফিন ও কচ্ছপের মৃতদেহ। গতকাল রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালেও হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছে একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন। এটি লম্বায় ৬ ফুট, ওজন প্রায় ১২০ কেজি।
এছাড়া ডলফিনের পাশাপাশি টেকনাফের হাজমপাড়া ও কক্সবাজারের দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসে ৪টি মৃত মা কচ্ছপ। কচ্ছপগুলো অলিভ রিডলি প্রজাতির।
এর আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কক্সবাজার শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে সোনারপাড়া সৈকতে ও ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে পাটুয়ারটেক সৈকতে মৃত দু’টি ডলফিন ভেসে আসে। ১৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণে হিমছড়ি সৈকতে একটি ডলফিন ও তার আগেরদিন শহরের সুগন্ধা পয়েন্ট সৈকতে একটি পরপইস এর মৃতদেহ ভেসে এসেছিল।
চলতি মৌসুমে কক্সবাজার শহর, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও সোনাদিয়া সৈকতে অন্তত ৮৫টি মরা সামুদ্রিক কচ্ছপ ভেসে আসে বলে জানান সমুদ্রবিজ্ঞানিরা। কিন্তু কী কারণে হঠাৎ করে বঙ্গোপসাগরে ডলফিন, কচ্ছপের এত সংরক্ষিত প্রাণী মারা যাচ্ছে তা বিজ্ঞানিদের কাছে এখনও পরিষ্কার নয়।
তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ।
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে ফরেনসিক নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। প্রাণীগুলোর আবাসস্থলে কোনো বড় ধরনের সমস্যা হয়েছে কি না, তাও অনুসন্ধান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।’
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বোরি) জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি বিচে ৬ ফিট লম্বা, প্রায় ১২০ কেজি ওজনের একটি মৃত ইরাবতী ডলফিন ভেসে এসেছে। ডলফিনটিতে তেমন কোন আঘাতের চিহ্ন না থাকলেও পেছনের পাখনায় সামান্য আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছে জানিয়ে এই বিজ্ঞানি বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করছি। মৃত ডলফিনটি সম্পর্কে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের জিম্মায় এটাকে পুঁতে ফেলা হবে।’